রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার অপরাধ করেই যাচ্ছে! :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। কোনো দ্বন্দ্বে না জড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধানে কাজ করছে তার সরকার। সকালে মিরপুর সেনানিবাসে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ-ডিএসসিএসসি’র গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এই কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারো সাথেই শত্রুতা নয়, বন্ধুতা সবার সাথে’ এই পররাষ্ট্র নীতি অনুযায়ী কাজ করছে বাংলাদেশ। আমরা আন্তঃরাষ্ট্রীয় সুসম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছি। কেউই বলতে পারবে না যে, বাংলাদেশের সাথে কোনো দেশের বৈরী সম্পর্ক আছে। আমরা সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়েই চলছি।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ ও নানাবিধ সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিপন্ন মানবতার স্বার্থে আমরা সাহায্যেরও হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। মিয়ানমার থেকে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা তাদেরকেও আশ্রয় দিয়েছি।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা কিন্তু কারো সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হইনি। আমরা মিয়ানমারের সাথে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যায়। আর এজন্য একটা বন্ধুত্বসুলভ মনোভাব নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। যদিও, যারা অন্যায় করেই যাচ্ছে, তাদেরও আমরা বলবো তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৪৫ মাসের প্রশিক্ষণ শেষ করা কর্মকর্তাদের সনদ বিতরণ করা হয়। এ বছর, করোনার প্রেক্ষাপটে সরাসরি কোর্স চালাতে না পারায়, পুরো প্রশিক্ষণটিই সম্পন্ন হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে মাধ্যমে ই-লার্নিং পদ্ধতিতে।
এ বছর, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে ১২৭ জন, নৌবাহিনী থেকে ৩২ জন, বিমান বাহিনী থেকে ২৩ জন কর্মকর্তা এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বাংলাদেশের ১৮২ জনসহ ৪৩ বিদেশী কর্মকর্তা মিলে ২০২১ সালে মোট ২২৫ জন কর্মকর্তা সনদ গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে ১০ জন নারী কর্মকর্তাও রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি যাতে শক্তিশালী হয় সেজন্য, কাজ করে যাচ্ছি আমরা। বাজেট এখন নিজস্ব অর্থায়নে করা হচ্ছে। এজন্য কারো ওপর নির্ভর করতে হয় না। আমরা আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি এবং সেই পথে অনেকাংশে আমরা সাফল্য অর্জন করেছি।’
দীর্ঘ ৪৫ মাসের প্রশিক্ষণ লব্ধ জ্ঞান দেশের স্থিতিশীলতা টেকসই উন্নয়ন ও ভাবমূর্তি রক্ষায় কাজে লাগাতে কোর্স সম্পন্ন করা কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। আগামীতে যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডিএসসিএসসি এর প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা।
পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ থেকে ২০৪১ পর্যন্ত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি। প্রত্যেকের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে চায় সরকার। সেভাবেই আমরা বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই। হয়তো চিরদিন থাকবো না, কিন্তু পরিকল্পনাটা দিয়ে যাচ্ছি।
প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারে। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
দেশের মহামারীর ভ্যাকসিন চলে এসেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। দেশের মানুষ মহামারিমুক্ত হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন সরকার প্রধান।