৬১ শতাংশ মানুষ স্কুল খোলার পক্ষে
করোনা মহামারি শুরুর পর গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় দফায় দফায় বাড়ানো হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা। সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে ছুটির ঘোষণা। বর্তমানে দেশের করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফলে স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে জনমত বাড়ছে।
বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ৬০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ মনে করে এখনই স্কুল খুলে দেয়া উচিত। তবে ৫৫ শতাংশ অভিভাবক তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে এখনো নিরাপদ বোধ করছেন না। আর ৮৭ শতাংশ শিক্ষক স্কুলে যেতে নিরাপদ বোধ করছেন।
মঙ্গলবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এসডিজিবিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্মের অনলাইন জরিপে এসব তথ্য উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নেহাল আহমেদ এবং প্রবীণ শিক্ষক নেতা কাজী ফারুক আহমেদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সংলাপে জরিপের তথ্য তুলে ধরেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) যুগ্ম পরিচালক অভ্র ভট্টাচার্য।
মোট এক হাজার ৯৬০ জনের ওপর জরিপটি চালানো হয়েছে। এর মধ্যে অভিভাবক ছিলেন ৫৭৬ জন এবং শিক্ষক ছিলেন ৩৭০ জন। বাকিরা অন্য শ্রেণিপেশার। ১৭ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি এই অনলাইন জরিপ পরিচালনা করা হয়।
জরিপে অভিভাবকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, স্কুল খুলে দেয়ার ক্ষেত্রে সরকার প্রণীত স্বাস্থ্য নির্দেশিকা সম্পর্কে তারা অবগত কি না। জবাবে জরিপে অংশ নেয়া প্রায় ৮৭ শতাংশ অভিভাবক বলেছেন, তারা এই স্বাস্থ্য নির্দেশিকা সম্পর্কে অবগত।
৪৫ শতাংশ অভিভাবক বলেছেন, তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে নিরাপদ বোধ করছেন। ৫০ দশমিক ৭ শতাংশ অভিভাবক মনে করেন, তাদের সন্তানরা স্কুল স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে চলতে সক্ষম না। এ ছাড়া ৬৭ শতাংশ অভিভাবক সুরক্ষার জন্য অতিরিক্ত ফি দিতে আগ্রহী নন। ৫২ শতাংশ মানুষ স্কুল খুলে দেয়ার পর সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কার কথা বলেছেন।
৮৭ শতাংশ শিক্ষক মনে করেন, তাদের স্কুলের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা নিশ্চিত করার সামর্থ্য রয়েছে। ৬৯ শতাংশ শিক্ষক অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহনে সরকারি অনুদানের কথা বলেছেন। আর অভিভাবক ও শিক্ষক বাদে জরিপে অংশ নেয়া অন্য শ্রেণিপেশার ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ সরকারের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা বাস্তবায়নযোগ্য বলে মনে করেন।
ভার্চুয়াল এই সংলাপে পর্যায়ক্রমে এলাকাভিত্তিক স্কুল খুলে শ্রেণিভিত্তিক (একসঙ্গে সব শ্রেণি না করে নির্ধারিত শ্রেণি) ক্লাস শুরুর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অভিভাবক ও শিক্ষক বাদে অন্য শ্রেণিপেশার ৬০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ স্কুল খুলে দেয়ার পক্ষে।