টঙ্গীতে ছুটি বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ; মহাসড়ক অবরোধ।
বি এ রায়হান, গাজীপুরঃ গাজীপুরের টঙ্গীতে ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এসময় শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহনে ভাংচুর চালালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ২৫জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। সোমবার সকাল ১১টার দিকে টঙ্গীর মিল গেইট এলাকার হামিম গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ কালেকশন লিমিটেড নামক কারখানায় এ বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। এসময় মহাসড়কের দু'পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। কারখানা সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে কারখানায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঈদ-উল ফিতরের সাত দিনের ছুটির পরিবর্তে দশ দিনের ছুটির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানায় কাজ বন্ধ করে দিয়ে কারখানার প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে পুলিশ শ্রমিকদের বিক্ষোভে বাঁধা দিলে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা প্রথমে কারখানায় ভাংচুর চালিয়ে পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বেশ কয়েকটি যানবাহনে ভাংচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল ছুঁড়ে। এতে অন্তত ২০জন শ্রমিক আহত হন। অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশের উপর হামলা চালালে শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহম্মেদ, গোয়েন্দা শাখার উপ পরিদর্শক (এসআই) কামাল পাশা ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রুবেল হাওলাদারসহ পাঁচজন আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ৮জন শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। কারখানার শ্রমিকরা জানান, কারখানায় ঈদ উপলক্ষে সাতদিনের ছুটির ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকরা ১০ দিনের ছুটির দাবি জানিয়ে আসছিলো। তিনদিনের ছুটি বাড়ানো নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেও কোনো ফল পাননি শ্রমিকরা। বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নামেন তারা। কারখানাটির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মিজানুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলনটি অযৌক্তিক। প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ উপলক্ষে শ্রমিকদের সাত দিনের ছুটি ঘোষণা করে কতৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকরা অযৌক্তিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে কারখানায় ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আজ (১০ মে) থেকেই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, শ্রমিকরা ছুটির দাবিতে প্রথমে কারখানায় বিক্ষোভ করে। পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহনে ভাংচুর চালায়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশের উপর হামলা চালালে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।