গাজীপুরে পরকীয়া প্রেমের জেরে স্বামীকে হত্যা স্ত্রী সহ গ্রেপ্তার দুই।
বি এ রায়হান, গাজীপুর: গাজীপুরের কাশিমপুরে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সহ প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যার পর নিহতের মরদেহ আলাদা দুটি স্থানে ছয় টুকরো করে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ লোপাট করতেই তারা এমনটি করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রবিবার ৩০ মে সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান, জিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার জাকির হাসান। নিহত সুমন মোল্লা বাগেরহাট জেলার গোলাবরননী বাজার গ্রামের জাফর মোল্লার ছেলে। তিনি স্ত্রী সহ কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট এলাকায় স্থানীয় শফিউল্লাহর বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন , নিহত সুমন মোল্লার স্ত্রী আরিফা বেগম ও ফরিদপুর জেলার নরকোনা গ্রামের আদিত্য সরকারের ছেলে তন্ময় সরকার। তারা উভয়ে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। জাকির হাসান বলেন, গত ২১ এপ্রিল কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট পুকুর পাড় এলাকায় সেপটিক ট্যাঙ্কি থেকে হাত-পা ও মাথাবিহীন অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কাশিমপুর থানার উপ পরিদর্শক মোজাম্মেল হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের এক পর্যায়ে ২৯ মে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ এই ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের স্ত্রী আরিফা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক তনয় সরকারকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে চক্রবর্তী তেঁতুইবাড়ি মোজার মিল সংলগ্ন ময়লার ভাগাড় থেকে নিহতের খন্ডিত হাত-পা ও মাথা সহ ৫ টুকরা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। জাকির হাসান আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ভিকটিমের স্ত্রী আরিফা বেগমের সঙ্গে তনয়ের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের জেরে ভিকটিম সুমন তার স্ত্রী ও তনয়কে মারপিট করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা সুমন মোল্লাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ১৯ এপ্রিল রাতে আরিফা তার স্বামী সুমন মোল্লাকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। পরে প্রেমিক তনয়কে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে সুমনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরের দিন মরদেহ করাত ও চাপাতি দিয়ে ৬ টুকরো করে আলাদা করা হয়। একপর্যায়ে নিহতের হাত-পা ও মাথাবিহীন শরীর সেফটিক ট্যাঙ্কিতে ও অপর ৫ টুকরা ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেয় গ্রেপ্তারকৃতরা। সংবাদ ব্রিফিংয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।