নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে ৬ জন গুলিবিদ্ধ, বাড়িঘর ভাঙচুর
নুরুন্নবী নবীন, নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। এসব ঘটনায় ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে কয়েকটি বাড়িঘর। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে চরএলাহী বাজার ও আশপাশের এলাকায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গনি এবং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের সমর্থকদের মধ্যে এ হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আবদুল গনি বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী এবং চরএলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অনুসারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সংঘর্ষে আহত লোকজনের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ছয়জনসহ নয়জনের পরিচয় জানা গেছে। তাঁরা হলেন হেলাল মেম্বারের ছেলে মো. রুবেল (২৫), মৃত আবদুল খালেক মেম্বারের ছেলে বাহার উদ্দিন (৩৬), সিরাজ আলমের ছেলে সবুজ (৩৮), জইধর মিয়ার ছেলে ইউসুফ (৩৩), মো. বেলালের ছেলে ফিরোজ (২৪), জামাল উদ্দিনের ছেলে ইলিয়াছ (২২)। এঁরা সবাই ছররা গুলিতে আহত। এ ছাড়া আহত অপর তিনজন হলেন মহরম আলী চেয়ারম্যানের ছেলে রিয়াদুল ইসলাম রাজু (২৮), মো. সামছুল হকের ছেলে আবদুর রহিম (২০), গোলাপ মাওলার ছেলে মো. রানা (২০)। গুলিবিদ্ধ ছয়জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চরএলাহী এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই দুটি পক্ষের বিরোধ দীর্ঘদিনের। ওই বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল গনির অনুসারীরা প্রথমে চরএলাহী বাজারে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চেয়ারম্যান রাজ্জাকের কয়েকজন অনুসারীকে মারধর করেন। এরপর রাজ্জাকের অনুসারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে গনির অনুসারীদের ওপর পাল্টা হামলা চালালে দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, হামলা ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় বেশ কিছু ককটেলের বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনা যায়। আওয়ামী লীগ নেতা গনির অনুসারী চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হেলাল হোসেন অভিযোগ করেন, ইউপি চেয়ারম্যান রাজ্জাক, তাঁর ভাই খোকন, জব্বর, শাহীন ও কালামের নেতৃত্বে তাঁর বাড়িসহ চারটি বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালানো হয়। এ সময় হামলাকারীদের গুলিতে তাঁদের সাতজন গুলিবিদ্ধ হন। ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের ভাই আবদুল আজিজ খোকন দাবি করেন, তাঁর ভাই রাজ্জাক এলাকায় নেই। এই হামলার সঙ্গে তাঁর ভাই এবং তাঁদের কোনো অনুসারী জড়িত নন। আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল গনির নেতৃত্বে তাঁর ভাই কামাল, বেলাল, নবী ও হেলাল মেম্বার প্রথমে চরএলাহী বাজারে ককটেলের হামলা চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে তাঁদের (রাজ্জাক) কয়েকজন অনুসারীকে মারধর করেন এবং ধনু নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে হামলা চালান। এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, রাজ্জাক চেয়ারম্যানের লোকজন বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল গনি ও হেলাল মেম্বারের বাড়িতে হামলা চালালে দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ছয়জন ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে রাতেই তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। হামলার ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষ মামলা করেনি।