সংগীত শিল্পীদের পারিশ্রমিক পরিশোধ না করে পালালো আয়োজক কমিটি।
টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের টঙ্গীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে মিউজিশিয়ান ও শিল্পীদের টাকা না দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে আয়োজক কমিটির বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২৫ মার্চ) রাতে মিলগেইট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগীরা রাত ৪টা পর্যন্ত তাদের পাওনা পারিশ্রমিকের জন্য টঙ্গী পূর্ব থানার সামনে অপেক্ষা করে বাড়ি ফিরে যান। জানা যায়, মিলগেইট ছাত্র ও যুব সমাজের উদ্যোগে অলিম্পিয়া টেক্সটাইল মিলস্ স্কুল মাঠে একটি মিনি ডে-নাইট ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান ছিলো। এদিন পুরস্কার বিতরন শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে আয়োজক কমিটি। এজন্য ভাড়া করে আনা হয় শিল্পী ও মিউজিশিয়ানদের। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অনুষ্ঠান শেষে। মিউজিশিয়ান ও শিল্পীদের পাওনা না মিটিয়ে আয়োজক কমিটি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে ভুক্তভোগীরা বিষয়টি সমাধানের জন্য গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতির বাসভবনে যায়। সেখানে তাকে না পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার সামনে অপেক্ষা করতে থাকে ভুক্তভোগী শিল্পী ও মিউজিশিয়ানরা। একপর্যায়ে পাওনা টাকা না পেয়ে ফিরে যায় ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগী নগর ব্যান্ড'র প্রধান রবিন অভিযোগ করে বলেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ২৩ হাজার টাকা চুক্তিতে মিউজিশিয়ান ও শিল্পীদের ভাড়া করেন আয়োজক কমিটি। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে আয়োজকরা কাউকে কিছু না বলেই টাকা না দিয়ে চলে যান। বিষয়টি নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমানের বাসভবনে বিচার দিতে গিয়েছিলাম। রাত চারটা পর্যন্ত আমাদের মেয়ে শিল্পীগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। তারা (আয়োজক) আমাদের একটা টাকাও দিলো না। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করতে আসা শিল্পী মিতুয়া বলেন, আমি মিরপুর থেকে এসেছি। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার কথা রাত ১১টায়, কিন্তু হয়েছে ১২টা পর্যন্ত। অনুষ্ঠান শেষে আমাদেরকে বসতে বলে আয়োজক কমিটি চলে গেছে। একজন নারী শিল্পী হয়ে রাত ৩টায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। তারা আমাদের পারিশ্রমিক দেয়নি, অগ্রিম টাকাও দেয় নাই। এখন বাসায় যাওয়ারও অবস্থা নাই। অভিযোগের বিষয়ে জানতে টুর্নামেন্টের আয়োজক কমিটির সদস্য ৫৫নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম সানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরবর্তীতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানের সভাপতি টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মনির আহম্মেদ বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। রাতে তো টাকা পরিশোধ করার কথা। তিনি বলেন, 'শিল্পীদের টাকা দিবেনা কেন? ভিটাবাড়ি বিক্রি করে হলেও টাকা দিতে হবে। শিল্পীদের আমার কাছে পাঠান, ওদের বাড়ি বিক্রি করে হলেও আমি টাকা পরিশোধ করিয়ে দিবো।' টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহ আলম বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।