সিরামিক পণ্য আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক বহালের দাবি
আমদানি পর্যায়ে তৈরি সিরামিক পণ্যের ওপর প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার না করে তা বিদ্যমান হারে বহাল রেখে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সিরামিক ওনার্স ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিডব্লিউএমএ)। একই সঙ্গে দেশীয় টাইলস উৎপাদন পর্যায়ে আরোপিত ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার বিকেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্মেলন কক্ষে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়নের লক্ষ্যে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব করেন সংগঠনটির নেতারা।
আলোচনা সভায় লিখিত বক্তব্যে বিসিডব্লিউএমএর সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, নতুন মূসক আইন, ২০১২ এর ধারা ৫৫(৪)(খ) এর বিধান অনুযায়ী ৬৯.০৭ ও ৬৯.০৮ হেডিংভুক্ত সিরামিক টাইলসের ওপর বিদেশ থেকে তৈরি পণ্য আমদানি এবং দেশে উৎপাদন উভয় পর্যায়ে সমান হারে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে, দেশে উৎপাদন পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক যথাক্রমে বিদ্যমান ১৫ শতাংশ থেকে ৪৫ শতাংশ। এর ফলে ৩৬ শতাংশ উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে বিদেশ থেকে আমদানি করা তৈরি পণ্যে শুল্ক-কর ৬০ থেকে কমে ৪৫ শতাংশ হবে। এতে দেশের সিরামিক শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তাই অসম বাজারে দেশীয় পণ্যকে টিকিয়ে রাখতে আমদানি পর্যায়ে তৈরি সিরামিক পণ্যে ওপর প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্ক বিদ্যমান হারে বহাল রেখে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ বাস্তবায়নের অনুরোধ জানাচ্ছি। (বর্তমানে টাইলস, টেবিলওয়্যার, স্যানিটারিওয়্যার-এই তিন খাতে সম্পূরক শুল্ক পরিশোধ করতে হয় ৬০ শতাংশ।)
এছাড়া সিরামিক শিল্পের কাঁচামাল, উপকরণ ও যন্ত্রাংশে আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি সম্পূরক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন তিনি।
সিরাজুল ইসলাম মোল্লা জানান, কিছু কিছু আমদানিকারক আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে সিরামিক পণ্য আমদানি করছে। এতে স্থানীয় উৎপাদকরা মার খাচ্ছেন। তাই সিরামিক পণ্য আমদানির ট্যারিফ ভ্যালু বাড়ানো দরকার।
মুন্নু সিরামিকের ভাইস চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম বলেন, চীনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন মেলায় সিরামিক পণ্যে দর যাচাই করে দেখা গেছে, বাংলাদেশে চীনা পণ্য কম দামে আমদানি করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় শিল্প প্রতিযোগিতায় টিকে থাকছে পারছে না। তাই শিল্পের স্বার্থে আন্ডার ইনভেসিং বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
নতুন মূসক আইন সম্পর্কে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবের জবাবে এনবিআরের সদস্য (মূসক) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এই আইন বাস্তবায়ন হলে অধিকাংশ পণ্যের উৎপাদন খরচ কমে আসবে। এই আইনের জটিলতা হলো নিয়মিত হিসাব রাখা। তবে ব্যবসায়ীরা যদি নিয়মিত হিসাব রাখতে পারেন, তাহলে তারা লাভবান হবেন। কারণ নিয়মিত হিসাব রাখলে করের আপাতন কমে আসবে। এই আইনে বড় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প প্রতিষ্ঠানও লাভবান হবে বলে জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে নতুন মূসক আইন সম্পর্কে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, এই আইন বাস্তবায়ন হলে দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের প্রসার ঘটবে।
তিনি বলেন, এখন থেকে কর রেয়াত বা প্রণোদনা দেওয়ার ফলে এর প্রতিদান কি পাওয়া যাচ্ছে, তার হিসাব করা হবে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংস্থার সদস্য পারভেজ ইকবাল,