বেসরকারী শিক্ষকদের বৈশাখী আনন্দ, নিরানন্দের অগ্রীম হাওয়ার বহিঃপ্রকাশ!!
বিশেষ প্রতিবেদক,মু.নজরুল ইসলাম।
বৈশাখী ভাতা না দিলে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কোনো কোনো বেসরকারি শিক্ষক সংগঠন। বিশ্বঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এ শোভাযাত্রাসহ বাংলা নববর্ষ পালন চলতি বছর থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এ সিদ্ধান্তের পেছনে সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গিবাদী অপতৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করার যুক্তিও কাজ করেছে। এদিকে, গত বছর পহেলা বৈশাখ থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের বৈশাখী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। তবে সমমানের মূল বেতন স্কেলে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা এখনও তা পাননি।
এ ভাতা না পেয়ে মর্মাহত তারা।
শিক্ষকদের এ সিদ্ধান্তে নাগরিক সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাদের মতে, শিক্ষকদের এ দাবি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। তবে মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো ঐতিয্যবাহিক আয়োজনের সঙ্গে অর্থনৈতিক দাবি-দাওয়া এক করে ফেলা ঠিক নয়। গত ১৬ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর থেকে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নিতে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বেসরকারি শিক্ষকদের সংগঠনগুলোর কেউ কেউ নিচুস্বরে বলছেন তারা বৈশাখী ভাতা না পেলে মঙ্গল শোভা যাত্রায় অংশ নেবেন না। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির বরগুনা জেলা শাখার সভাপতি মোঃহারুন অর-রশিদ বলেছেন, বৈশাখী ভাতার দাবীতে তারা বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করবেন।
এ বিষয়ে প্রধানশিক্ষক ফোরামের আমতলী উপজেলা শাখা সভাপতি আঃজব্বার ঘরামী জানান,বেসরকারি শিক্ষকরা বৈশাখী ভাতা পাবেন না, এটা হতে পারে না। তিনি বলেন,বৈশাখী ভাতা দেওয়া না হলে শিক্ষকরা কোনোভাবেই মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন না। কারণ, তাদের মনে বৈশাখের কোনো আনন্দই থাকবে না।
শিক্ষক নেতাদের এ অবস্থানের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সম্মিলিত সুশীল সমাজ নেতারা বলেন ‘শিক্ষকদের এ ধরনের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। শিক্ষার্থীরা এই দিন বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির মেলবন্ধনে আবদ্ধ হবে। এমন একটি ঐতিহাসিক আয়োজনের ক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি উদার হওয়া উচিত। তিনি বলেন, বৈশাখী ভাতা সরকারি কর্মচারীসহ অল্প কিছু মানুষ পেয়ে থাকেন। অন্যরা নিজেদের খরচেই বৈশাখ উদযাপন করেন। তাই শিক্ষকদের এমন অবস্থানে আমরা মর্মাহত।