মুন্সীগঞ্জের দিঘিরপাড়ে ওরশের নামে ভন্ডামী পরিক্ষার্থীরা বিপাকে
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড়ের বেশনাল এলাকার কবরস্থান সংলগ্ন এলাকা জুড়ে ওরসের নামে উচ্চস্বরে গান বাজনা করারফলে এ অঞ্চলের এইচ এসসি পরিক্ষার্থীরা পড়েছেন বিভ্রান্তিতে। স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন,গত ২ দিন ব্যাপী বেশনাল এলাকায়চিশতিয়া তরিকার শাহ সূফী মোঃ ওয়ালিউলালাহ খাঁন উরসের আয়োজন করেন।গত রাতে এই ওরশকে কেন্দ্র করে এলাকা জুড়ে গাছে গাছে ঝুঁলানো হয়েছে একাধিক মাইক। এই মাইকগুলোর উচ্চ আওয়াজ চারিদিকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌছে যাচ্ছে। আর রাত একটু গভীর হলে এই মাইকের আওয়াজ আরো দূরবর্তী এলাকায় চলে যাচ্ছে। এতে করে এলাকার শিক্ষার্থীরা চলতি এইচ এসসি পরীক্ষায় ঠিকমত পড়ালেখায় মনোযোগ দিতেপারছেনা। এমনটাই জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সরেজমিনে বিকালে বেশনালে গিয়ে দেখা যায়, গত রাতে ওরশের প্রথম রাত শেষ হয়েছে। এখনও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিল্পী ও মাজারভক্ত নারী পুরুষদের অবস্থান সেখানে।ব্যাপক রান্নার আয়োজন চলছে ২য় দিনের উরস উপলক্ষে। পীর সাহেবের খানকা শরীফ নামের জলসা ঘরটিকে প্রায় হাজার টাকার ফুল দিয়ে সাঁজানো হয়েছে। এবং পীর সাহেবের আসনটিও বেশ পরিপাটি। খানকার উঠানে বসানো হয়েছে তাবু সেখানেও প্রায় ৪-৫ টি আসন। আসনগুলোর নিচেরয়েছে সুগন্ধী আগরবাতি, দিয়াশলাই ম্যাচ, কয়েকটি বিভিন্ন কোম্পানিরসিগারেটের প্যাকেট।আসন বিষয়ে জানতে চাইলে খাজাভক্ত মুরুব্বি আবুল জানান, আসনগুলোতে লালনভক্ত, খাজাবাবা, লেংটাবাবাসহ বিভিন্ন পীরের ভক্তরা বসে তাদের কার্যক্রম চালায়। কি কি করা হয় আসনগুলোতে বসে এমন প্রশ্নের জবাবেতিনি বলেন, এখানে রাত হলেই সাধু সন্নাসীরা তাদের ভক্তদের আর্শিবাদদিবে। রাতে কমবেশী একটু-আধটু গাঁজা সেবন চলেই।নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক এইচ এসসি পরিক্ষার্থী জানান, রাত ৮টার পর থেকেই শুরু হয় উচ্চস্বরে গানবাজনা। সারারাত চলে তাদের এইগান। আর মাইকগুলোর উচ্চ আওয়ার চারদিকে থেকে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। এতে করে মন দিয়ে পড়াশোনা করতে পারছিনা। অনেকটা বিভ্রান্তিতেপড়তে হচ্ছে আমাদের। আগামী পরিক্ষাগুলোতে এর প্রভাব পড়তে পারে। প্রশাসনের কাছে দাবি পরিক্ষার কথা বিবেচনা করে মাইকগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হোক।নাম প্রকাশে স্থানীয় কয়েকজন মুরুব্বি জানান,এখানে কোন মাজার নেই ।অথচ প্রতিবছর উরসের নামে চলে ব্যবসা। সাপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার জলসা হয় আর জলসাতে চলে নারী ও পুরুষের অবাধ নীলা কীর্ত্তন। রাত গভীর হলেই চলে গাঁজা সেবনের রমরমা আসর।খানকার ভিতরে কথা হয় পীর সাহেবের নাতি খানকা শরীফের খাদেম গোলজারহোসেনের সাথে তিনি জানান, শাহ সূফী মোঃ ওয়ালিউলালাহ খাঁন কুমিল্লার খাজা বাবা ফরিদ উদ্দিন চিশতির ভক্ত। আর পীর সাহেবের আস্তানা ঢাকার মিরপুর ১ এর দাউদখাঁন মসজিদের সামনে। এখানে তিনি পীরের নামে বছরে ২ দিন ওরশ করে এবং প্রতি সাপ্তাহের বৃহস্পতিবার জলসার আয়োজন করেন।মাইকের আওয়াজের কথা স্বীকার করে বেশনাল চিশতিয়া দরবারের পরিচালক শাহ সূফী মোঃ ওয়ালিউল্লাহ খাঁন মোবাইলে জানান,এটা কোন মাজার নয় আমরা নিজেরাই একটা খানকা বানিয়েছি। আমি চিশতিয়া তরিকার ভক্ত। এখানে প্রতিবছর বিভিন্ন তরিকার লোকজন আসে। আজই শেষ দিন মাইকে বছরে একবার ঝামেলাকে বেশী বড় করে দেখার কিছু নেই।পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম(পিপিএম) বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে*