ঢাকার ওয়ার্ড বয় মাগুরায় গিয়ে হন নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ!
ঢাকা মেডিকেলের একজন ওয়ার্ড বয় নিজেকে নিউরো মেডিসিন এবং মেডিসিন ও স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দিয়ে গত দুই মাস ধরে রোগী দেখে যাচ্ছিলেন। তার ভিজিটও ছিলো ৫০০ টাকা। অতঃপর ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাতে ধরা পড়ে এক বছরের জন্য জেলে গিয়েছেন এই ভুয়া চিকিৎসক।
ভুয়া এই চিকিৎসকের নাম মুহাম্মদ খোরশেদ আলম। নিজেকে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পরিচয় দিতেন সবার কাছে। তার প্রদত্ত ব্যবস্থাপত্রেও সহকারী অধ্যাপক লিখা রয়েছে। এছাড়া এমবিবিএস (ডিএমসি), বিসিএস (স্বাস্থ্য), এফসিপিএস (মেডিসিন), এমডি (নিউরোলজি) ও এফআরসিপি (লন্ডন) –এর মতো বড় বড় ডিগ্রিও আছে তার ঝুলিতে।
তবে আদতে এই লোক মাত্র অষ্টম শ্রেণি পাস। মাগুরা সদর হাসপাতালের পাশে গ্রামীণ ল্যাব মেডিকেল সার্ভিসেস নামের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত দুই মাস ধরে নির্বিঘ্নে মানুষকে নিউরো মেডিসিন এবং মেডিসিন ও স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন তিনি। সপ্তাহে প্রতি বুধবার ঢাকা থেকে মাগুরায় এসে রোগী দেখতেন এই ভুয়া চিকিৎসক।
মাগুরার সিভিল সার্জন মুন্সী মো. সাদুল্লাহ জানান, তার চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিকভাবে আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানাই। জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাঠান।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসে খোরশেদ আলমকে চ্যালেঞ্জ করলে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের প্রমাণপত্র, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি চাকরির আইডি নম্বর এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন নম্বরের কোনোকিছুই দেখাতে পারেননি। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাকিম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দীপক কুমার দেব শর্মা খোরশেদ আলমকে এক বছরের কারাদণ্ড দেন।
মাগুরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বিশ্বাস জানান, খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এই খোরশেদ আলম ঢাকা মেডিকেল কলেজের একজন ওয়ার্ড বয়। এর আগেও একবার কুমিল্লায় ডাক্তার সেজে রোগীদের সাথে প্রতারণা করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলো।