সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হবে গণপূর্ত মন্ত্রী চট্টগ্রাম ৫-৭ বৎসরের মধ্যে আঞ্চলিকভাবে ভাইব্রেন্ট হবে এম. এ. লতিফ এমপি
এম. রফিকুল ইসলাম (চট্টগ্রাম) Channel 4TV : দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি আয়োজিত ২৫তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৭ এ অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে এ্যাওয়ার্ড ও সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠান ২৭ এপ্রিল বিকেলে পোলোগ্রাউন্ডস্থ মেলা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ এম. এ. লতিফ বক্তব্য রাখেন। সভাপতিত্ব করেন চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে চেম্বার পরিচালকবৃন্দ, ভারতের সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার, ডিপ্লোম্যাটস, সরকারী উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, সিসিসি কাউন্সিলরবৃন্দ, বিভিন্ন ট্রেডবডি নেতৃবৃন্দ, অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিসহ নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন-দেশীয় বিশেষ করে কৃষিজাত পণ্য এখন রপ্তানি হচ্ছে। তিনি দেশীয় পণ্যের প্রসারে বাণিজ্য মেলার জন্য উপযুক্ত জায়গা পাওয়া সাপেক্ষে একটি স্থায়ী ভেন্যু বরাদ্দের কথা জানান। তিনি বলেন-স্বাধীনতার পর থেকে বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হলেও অবহেলিত চট্টগ্রামে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড গতি পায়নি। ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হলেও সংশ্লিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠানের হেড কোয়ার্টার এখানে নেই। মিরসরাইয়ে ৩৫ হাজার একর ভূমির উপর অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের পাশাপাশি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনের উপর দিয়ে মিরসরাই পর্যন্ত আরেকটি চার লেইন সড়ক নির্মাণ করা হবে। কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের মধ্য দিয়ে ওয়ান সিটি টু টাউন’র আইডিয়া বাস্তবায়ন করা হবে। মহেশখালী থেকে ৩০ ইঞ্চি এলএনজি পাইপ লাইন নির্মাণ শেষ পর্যায়ে এবং আরেকটি ৪২ ইঞ্চি পাইপ লাইন নির্মাণ করা হবে যা কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে যুক্ত হবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক শক্তি ফিরে আসবে। ১৮ মিটার ড্রাফটের প্রাকৃতিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হবে বলে জানান গণপূর্ত মন্ত্রী।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ এম. এ. লতিফ কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস হ্রাস করার জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন-ভৌগোলিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে উভয় দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে। পাশাপাশি থেগামুখ, পরশুরাম, রামগড় ইত্যাদি স্থল বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরী। তিনি আরো বলেন-বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পতেঙ্গা, কর্ণফুলী, লালদিয়া টার্মিনালের কাজ দ্রুত গতিতে ত্বরান্বিত করতে হবে। মহেশখালিতে দু’টি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ এবং মিরসরাই ও আনোয়ারা ইকোনমিক জোনে জাপান, চীন, ভারতসহ আগ্রহী দেশসমূহের বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন তথা সুখী, সমৃদ্ধশালী দেশে উন্নীত হবে বাংলাদেশ এবং আগামী ৫-৭ বৎসরের মধ্যে চট্টগ্রাম অর্থনৈতিকভাবে ভাইব্রেন্ট হবে।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম তাঁর বক্তব্যে এসএমই সেক্টরের পণ্যের প্রসার ও বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে বাণিজ্য মেলা আয়োজনের জন্য একটি স্থায়ী ভেন্যুর বরাদ্দের জোর দাবী জানান। তিনি চট্টগ্রাম মহানগরীর উন্নয়নের লক্ষ্যে বারিক বিল্ডিং থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ অথবা প্যারালাল রোড নির্মাণ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ৮ লেনে উন্নীতকরণ, চট্টগ্রামের ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান বাস্তবায়নের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা এবং যানজট নিরসন, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বে-টার্মিনাল জরুরী ভিত্তিতে বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান। তিনি সুষ্ঠুভাবে সিআইটিএফ-২০১৭ সম্পন্ন করতে সার্বিক সহযোগিতার জন্য অংশগ্রহণকারী সকল দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠান, জেলা প্রশাসন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, র্যাব, মেট্রোপলিটন পুলিশ, নগর বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, এনএসআই, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, পিডিবি কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। মেলা ০১ মে’১৭ ইং সোমবার পর্যন্ত চলবে।