গলাচিপা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ঘুষ দুর্নীতির তদন্ত
বিশেষ প্রতিবেদক,মু.নজরুল ইসলাম Channel 4TV :
শনিবার গলাচিপা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অর্ধকোটি টাকার দুর্নীতির তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ঢাকা অফিসের সহকারি পরিচালক, পাঠ্যক্রম ও গবেষনা শাখার আবদুল ওহাব মিয়া এ তদন্ত করেন। গত বছরের ২৮ আগষ্ট দৈনিক যুগান্তরে ‘গলাচিপা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরে অর্ধকোটি টাকার ঘুষ বানিজ্য’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদ , ভুক্তভোগী শিক্ষক ও মৃত শিক্ষকদের স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে এ তদন্ত করা হয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা উপস্থিত গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে এ তথ্য জানান। এদিকে অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আঃ ছত্তার জোমাদ্দার ও ইউডিএ কাম হিসাব রক্ষক নীধির রঞ্জন দাসের উপস্থিতিতে এ তদন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ায় প্রকৃত সত্য উদঘাটন না হওয়ার আশংকা করছেন অভিযুক্তরা। অধস্তনরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সামনে কোন বক্তব্য বা লিখিত দিতে সংগত কারনেই সাহস করেন নি। এ কারনে অনেক অভিযুক্ত তদন্তানুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। তবে তদবিরবাজ শিক্ষকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
সূত্র জানান, এ তদন্তানুষ্ঠান হওয়ার দু’দিন আগে থেকেই উপজেলায় কর্মরত সকল সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাঠে নামিয়ে দেয়া হয়। অভিযোগকারীরা তদন্তস্থলে যাতে উপস্থিত না হয় তাদের ম্যানেজ করতে মাঠে নামানো হয় সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তাদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক শিক্ষক জানান, জাতীয় স্কেল- ২০১৫ এর বেতন নির্ধারন, শিক্ষা ভাতা, ইনক্রিমেন্ট সিএনএড পাশের বর্ধিত বিল, বকেয়া, পেনশন, মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ সব কাজেই গলাচিপা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরে ঘুষ দিতে হয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আ. ছত্তার জোমাদ্দার ও হিসাব রক্ষক নীধির রঞ্জন দাসের বিরুদ্ধে শিক্ষকরা এ ঘুষের অভিযোগ করেন। তবে তারা উভয়েই তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। পটুয়াখালী জজ কোর্টের সিনিয়র আইজীবী আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মোসা. হাসিনা বেগমের পেনশনের ফাইল আটকে ঘুষ দাবি করেন। পূর্ব গোলখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের এলপিআরের কাগজপত্র প্রস্তুত করার জন্য টাকা দাবি করেন। দুইবার ষ্টোক করা ওই শিক্ষক এ কথা শুনে চা দোকানে গিয়ে অন্য সহ কর্মীদের সাথে এ বিষয়ে আলাপ করার সময় সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। শিক্ষক শুনীল চন্দ্র শীল, প্রধান শিক্ষক জালাল আহমেদ, মৃত শিক্ষক সেকান্দার আলী মোল্লার ছেলের কাছ থেকে পেনশনের ফাইল করার জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া আরও অসংখ্য ঘুঘ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে এক শিক্ষকের সাথে আলাপকালে জানান, গলাচিপা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের ঘুষ বানিজ্যের এটি একটি খন্ড চিত্র মাত্র।