একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ আসনে রাজনীতির পালে আওয়ামীলীগের ’চার’ বিএনপির ’দুই’ জাতীয়পার্টির একক প্রার্থী হাওয়ার হাওয়া
ছনি চৌধুরী,হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি Channel 4TV :
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এরই মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের প্রস্তুত করে তুলতে শুরু করেছেন । কিন্তু হবিগঞ্জ ১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপি উভয় দলের মনোনয়ন পেয়ে দলীয় প্রতিক নিয়ে প্রার্থী হতে এরই মধ্যে উঠে পড়ে লেগেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীগণ। জাতীয় সংসদ এর ৩০০ আসনের মধ্যে হবিগঞ্জ জেলার চারটি আসন বরাবরই ছিল বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের দখলে। কিন্তু একটি আসনে বেশ কয়েকবার ব্যতিক্রম ঘটেছে। আওয়ামীলীগের গর্র্ত ভেদকারী আসনটি হচ্ছে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসন। ২০১৪ সালে বিএনপি বিহীন জাতীয় দশম সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু। এর আগে সাবেক মন্ত্রী ও হবিগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য দেওয়ান ফরিদ গাজী’র মৃত্যুর পর উপ নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’র) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ¦ শেখ সুজাত মিয়া। বিএনপির এই আসনের বিজয় নিয়ে তখন বেশ আলোচনা হয়েছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপির হয়ে (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে লড়বেন আলহাজ¦ শেখ সুজাত মিয়া কিন্তু এতে রয়েছে সংশয় কারণ যুক্তরাষ্ট্র শিকাগো বিএনপির (সভাপতি) শাহ মোজাম্মেল নান্টু ও এই আসনে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে লড়তে চান বলে শুনা যাচ্ছে । নবীগঞ্জে উপজেলা বিএনপি এখন দ্বি-খন্ডিত । গত বছরের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রথম বারের মতো নবীগঞ্জ উপজেলায় ব্যতিক্রমি কিছু ঘটে,যুক্তরাষ্ট্র শিকাগো বিএনপির (সভাপতি) শাহ মোজাম্মেল নান্টু সমর্থিত ৪জন বিএনপি নেতা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পায় । এই দ্বি-খন্ডের কারণে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চরম ভরাডুবি হয় বিএনপির এটাকেই একমাত্র করণ হিসেবে মনে করছেন জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা । হবিগঞ্জ ১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে বিএনপি থেকে ২জন নেতার প্রার্থী হওয়ার কথা শোনা গেলেও আওয়ামীলীগের প্রার্থী হতে চান বিএনপির চেয়ে একগুণ বেশি অর্থাৎ চারজন। ইতিমধ্যেই নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা নানা কৌশলে মাঠে নেমেছেন। হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে আওয়ামীলীগের নৌকা নিয়ে লড়তে চান বলে শুনা যাচ্ছে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, সাবেক এমপি মরহুম দেওয়ান ফরিদ গাজী’র পুত্র হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ নেতা দেওয়ান শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী,(হবিগঞ্জ-সিলেট) সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এড. আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, ও নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হবেন বর্তমান এমপি ও কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু। ইতিমধ্যেই নির্বাচনের প্রস্তÍুতি নিয়ে নানা কৌশল অবলম্বন করে মাঠ চষতে শুরু করেছেন আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা । অন্যদিকে বিভিন্ন দিবসকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ,বিএনপির সমর্তকরা প্রিয় নেতাকে হবিগঞ্জ ১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে এম.পি হিসেবে দেখতে চান বলে বিভিন্ন হাট-বাজারে ব্যানার,পেষ্টুনে এমন চিত্র ধারণ করে টাঙ্গিয়ে রাখতে দেখা যায়। সাধারণ জনগণর মনে করেছেন, কে প্রার্থী হবেন সেটা দলীয় ব্যাপার। তবে যারাই প্রার্থী হবেন তাদেরকেই নির্বাচনের আগে এমন কিছু করে দেখাতে হবে যা নির্বাচনের পরও তাদেরকে আস্থা-বিশ্বাস করা যায়। নির্বাচনের আগে এমপি প্রার্থীদের রং থাকে একরকম এবং নির্বাচনের পরে দেখা যায় আরেকরকম। কাজেই এখন আমরা নগদে বিশ্বাসী, বাকিতে নয়। এমপিদের কাজ হচ্ছে মানুষের বিপদে-আপদে সাহায্য করা এবং আইন পাস করা। আমাদের এমপিরা দ্বিতীয় কাজটি করলেও প্রথম কাজটিতে মনোযোগী নন। তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেব অনেক ভেবে চিন্তে।