রংপুরে আজও নেই শ্রম আদালত-শ্রমিক কল্যাণ কেন্দ্র
রংপুরে আজও গড়ে ওঠেনি বিভাগীয় শ্রম দফতর, শ্রম আদালত ও শ্রমিক কল্যাণ কেন্দ্র। ফলে এ বিভাগের লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষ তাদের প্রাপ্য ন্যায্য মজুরি ও আইন সঙ্গত অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একদিকে মালিক পক্ষের আর্থিক ও অন্যান্য অধিকার থেকে বঞ্চিত, অন্যদিকে ট্রেড ইউনিয়ন নামধারী কিছু সংগঠনের হয়রানির শিকারও হচ্ছেন তারা।
রংপুর বিভাগের ৮ জেলার শ্রমজীবী মানুষকে তাদের ক্ষতিপূরণ, ন্যায্য মজুরি, স্বাস্থ্যগত সুবিধা ছাড়াও আইনি অধিকার আদায়ে এখনও যেতে হয় রাজশাহীর বিভাগীয় শ্রম আদালত আর বগুড়ার আঞ্চলিক শ্রম আদালতে। পঞ্চগড় কিংবা ঠাকুরগাঁও থেকে ৩’শ কিলোমিটার দূরত্বে রাজশাহীর ওই আদালতে যেতে একদিকে সময়ের অপচয়, অন্যদিকে দরিদ্র এই শ্রমিক কর্মচারীদের গুণতে হয় মোটা অংকের টাকা।
কয়েকজন শ্রমিক বলেন, 'যে শ্রমিকটা দুর্ঘটনায় পড়লো তার জন্যে আমরা ক্ষতিপূরণ দাবি করবো এমন জায়গা আমরা পায়না। আমরা রংপুরে একটা শ্রম আদালত চাই।' রংপুরে একটি আঞ্চলিক শ্রম দফতর প্রতিষ্ঠা হলেও মূলত তা অকার্যকর। গত কয়েক বছরে বেড়েছে শিল্প কলকারখানা, ব্যবসা বাণিজ্য এবং শ্রমিক কর্মচারী। কিন্তু বাড়েনি শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা।
কয়েক জন শ্রমিক বলেন, 'আমরা ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত চাকরি করি। আমাদের অভিযোগ দেয়ার মত কোন জায়গা নাই।'
শ্রমিক নেতারা বলছেন, শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে জরুরি ভিত্তিতে এখানে আদালত প্রতিষ্ঠা করা দরকার। সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সংগঠক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, 'শ্রম আইনের অধিকার থেকে শ্রমিকরা সম্পূর্ণ ভাবে বঞ্চিত। মৃত্যুর মত ঘটনাও অহরহ ঘটছে।' জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অশোক সরকার বলেন, 'পঞ্চগড় থেকে রাজশাহী ৩শ কিলোমিটারের উপরে। এই অবস্থায় রংপুরে শ্রম আদালত হওয়া একান্ত প্রয়োজন।'
আর আঞ্চলিক শ্রম কর্মকর্তা এবং বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাও বিভাগীয় শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে শোনালেন আশার বাণী। সহকারী শ্রম পরিচালক মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান বলেন, 'রেজিস্ট্রেশন প্রদানে সহযোগিতা করা সহ আমরা রেজিস্ট্রেশন আমাদের দফতর থেকে দিয়ে থাকি।' ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার বলেন, 'এখানে শ্রম আদালত দেয়ার জন্যে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। খুব দ্রুত শ্রম আদালত দেয়া হবে।'
রংপুর বিভাগে প্রায় ৮ শতাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরণের শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন প্রায় অর্ধ কোটি শ্রমিক।