শ্রীপুরে উচ্ছেদের হুমকীতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অসহায় এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, পুলিশের আপসের প্রস্তাব ।
টি.আই সানি,গাজীপুর Channel 4TV :
গাজীপুরের শ্রীপুরে বরমী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের এক অসহায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী তিন কন্যা সন্তান নিয়ে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের হুমকীতে পালিয়ে বেড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।বিচারের জন্য প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও তিনি বিচার না পেয়ে উল্টো পুলিশের কাছ থেকে পেয়েছেন আপসের প্রস্তাব ।
দুর্লভপুর গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রওশন আরা বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ চরবহর মৌজার তাদের বৈধ এক একর চল্লিশ শতাংশ জমিতে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন, বিগত ১৯৯৫ সালে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তার স্বামী বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুবকর ছিদ্দিক ৩ কন্যা সন্তান রেখে মারা যায়। নানাভাবে কষ্ট করে ৩ সন্তানকে লেখাপড়া করিয়েছি ।
তখন থেকে একই গ্রামের ভাসুর ইসমাইল হোসেনের ছেলে মাসুদ ও মামুন তাদের বিভিন্নভাবে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে আসছে । সম্প্রতি তারা স্থানীয় ইদ্রিস আলী, আমিনুল ইসলাম, আব্দুল আজিজকে নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘরবাড়ি দখলের পায়ঁতারা করছে।তাদের হুমকীতে বর্তমানে ৩ মেয়ে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় থাকতে হচ্ছে ।
নিজের ভিটেমাটিতে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করলে, শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক সৈয়দ আজিজুল হক, ভাসুরের ছেলেদের সাথে আপস করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন। এছাড়াও বরমী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিচার করে দিবেন বলে ছয় মাস যাবৎ তাকে ঘুরিয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধার কন্যা শাহানাজ পারভিন বলেন, আমার চাচাতো ভাইয়েরা ছোটকাল থেকেই আমাদের উপর নির্যাতন করে আসছে এখন ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে আমাদের সকল জমি দখলের চেষ্টা করছে। আমার মা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বরমী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ শ্রীপুর থানায় অভিযোগ করেও কোনো বিচার পায়নি ।
মুক্তিযোদ্ধার অপর কন্যা সুরাইয়া বেগম বলেন,ছোট কাল হতে আমরা চাচাত ভাইদের অত্যাচারে বিভিন্ন জায়গায় থেকে লেখাপড়া করেছি,এখন অত্যাচারের মাত্রা এত বেড়ে গেছে যে,বাড়ী থাকলেও বাড়ীতে যেতে পারিনা।
এ বিষয়ে স্থানীয় এফ রহমান বলেন, এই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার দীর্ঘদিন যাবৎ নির্যাতনের স্বীকার হয়ে ঘর ছাড়া । বর্তমানে তার ঘরবাড়ি তালাবদ্ধ ।
অভিযোগের বিষয়ে মামুন মিয়া বলেন,আমরা আমাদের বৈধ জমি দাবী করায় তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজুল হক বলেন,ভোক্তভূগী অসহায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কথা বিবেচনা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে ।
বরমী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হক বাদল বলেন,এমন অভিযোগের বিষয়টি আমার মনে নেই,তবে পরিষদে বিচার প্রার্থনা করলে হয়ত তখনই সমাধান করে দেওয়া হয়েছে।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বলা হয়েছে তবে কোনো আপসের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি । এবং দুই পক্ষকে বার বার ডাকা হলেও তারা কোন সারা দেইনি।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনা বেগম বলেন,আমি সদ্য যোগদান করায় বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি,তবে মুক্তিযোদ্ধার পরিবার পালিয়ে থাকার বিষয়টি আমি গুরুত্বের সাথে দেখব।