আরেফিন সিদ্দিক ব্যতিক্রমী উপাচার্য
২০১৪-১৫ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যের আপ্যায়ন ব্যয় ধরা হয়েছিল সাড়ে ১০ লাখ টাকা। এ নিয়ে সে সময়ে বেশ আলোচনা-সামলোচনা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতের চেয়ে আপ্যায়ন ব্যয় বেশি হওয়াতে ওই আলোচনার সূত্রপাত। সম্প্রতি আলোনায় আসে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যবিদায়ী উপাচার্যের আপ্যায়ন ব্যয়। তিনি দুই বছরে ক্যাম্পাসে ১৬৫ দিন অবস্থান করে আপ্যায়ন বাবদ খরচ করেছিলেন ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯৫ টাকা। মাত্রাতিরিক্ত আপ্যায়ন ব্যয় ও তিনটি গাড়ি ব্যবহারসহ নানা বিষয় উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত প্রতিবেদনে। গণমাধ্যমসহ সামাজিক মাধ্যমেও বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হয়। উপাচার্যদের ক্ষমতা ও নেতিবাচক এসব তথ্যে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সর্ম্পকে বিরূপ ধারণা করে থাকে দেশের জনগণ। তবে এসব দিক থেকে পুরোপুরি ব্যতিক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। গত সাত বছরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা সাশ্রয় করেছেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট অধিবেশনে বিষয়টি উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীনের বাজেট বক্তৃতায়। তিনি জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে তিনি সর্বোচ্চ সময় দেন এসব পরিকল্পনার কাজে। অতিরিক্ত এসব কাজে সময় দেয়ার জন্য নির্ধারিত থাকে ভাতা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়েও এ ধরনের ভাতা আছে। আর ভর্তি পরীক্ষায়ও প্রধান পরীক্ষকদের অনেক টাকা নির্ধারিত থাকে ভাতা হিসেবে। কিন্তু উপাচার্য কোন ভাতা গ্রহণ করেননি। বিষয়টি দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনুকরণীয় বলে আমরা মনে করি। শিক্ষকরা শুধুমাত্র ছাত্র পড়ানোর জন্য কাজ করেন না, একটি জাতির নৈতিক শিক্ষার অবকাঠামো তৈরিতেও তাদের অবদান আছে এবং থাকা উচিত। দেশের জনগণের করের টাকায় পরিচালিত বিভিন্ন সরকারি ও আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাথাভারি প্রশাসন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এই দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা নেবে বলে আমাদের আশাবাদ।