নতুন মাত্রা ভাটপাড়া ডিসি ইকো পার্ক
মেহেরপুর জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঈদের দিন বিকেল থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় পড়েছে। বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুরা স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছেন। ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্স ও আমঝুপি নীল কুঠির পাশাপাশি এবারে বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ করেছে গাংনীর ভাটপাড়া নীল কুঠিতে নির্মিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) ইকোপার্ক। জেলার মধ্যে ডিসি ইকো পার্কটি বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ঈদের দিন বিকেল থেকে হাজারো দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত এই পার্কটি।
ভাটপাড়া কুঠি ডিসি পার্কে ঘুরতে এসেছেন অনেক কর্মব্যস্ত মানুষ। সারা বছর কাজের চাপে পরিবারকে তারা সময় দিতে পারেননা। তাইতো ঈদের নতুন পোষাকে সেজে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন অনেকেই। যান্ত্রিক কোলাহাল আর শহর জীবনের ব্যস্ততা না থাকায় মনের পালে হাওয়া লেগেছে তরুণ-তরুণীদের। বন্ধু-বান্ধব মিলে ঘুরতে এসেছেন ডিসি ইকো পার্কে।
নির্মানাধীন পার্কটিতে রয়েছে পশু-পাখির ভাষকর্য। দৃষ্টিনন্দন বাগান, পুকুর, শাপলা, ফুটওয়্যার, ফুলের বাগান ও দেশীয় গাছ সম্মৃদ্ধ বাগান। রয়েছে ইংরেজদের শোষণের স্মৃতি চিহ্ন বিজড়িত নীলকুঠির বিভিন্ন স্থাপনা। এসব দেখে বেজায় মুগ্ধ দর্শনার্থীরা।
দর্শনার্থী মিজানুর রহমান ও লাকি আক্তার বলেন, সারা বছর সময় পায় না। তাছাড়া বাড়ির কাছে এত সুন্দর একটি পার্ক নির্মান হচ্ছে তাই বাড়িতে থাকতে পারলাম না। বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে বেড়াতে এসেছি। বেশ ভাল লাগছে। ঈদের আনন্দ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে ডিসি ইকো পার্ক।
নির্মানাধীন রয়েছে দৃষ্টিনন্দন গেট, পানির ফোয়ারা, লেকের ওভার ব্রিজ, শিশুপার্ক, লেক, স্মৃতি সৌধ ও বসার স্থান।
ডিসি ইকো পার্কের নকশাকার গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দিলিপ কুমার সেন বলেন, ১০০ বিঘা জমির উপর পার্কটি স্থাপিত হচ্ছে। পার্কের পশ্চিম পাশের কাজলা নদী পুনর্খনন করা হচ্ছে। নদীর দুপাড়ে দৃষ্টিনন্দন বাগানের মধ্যে বসার স্থান ও পায়ে হাটার পথ নির্মান করা হবে। পুনর্খনন কাজ শেষে হলে আরো দৃষ্টিনন্দন করা হবে।
পার্কের মনোরম পরিবেশে সময় কাটাতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থীরা। প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে উপভোগ করছেন ঈদ আনন্দ। ডিসি ইকো পার্ক দর্শনের পাশাপাশি কেনাকাটা করেও সময় কাটাচ্ছেন। ঈদের দিন বিকেলে পার্ক পরিদর্শনে আসেন মেহেরপুর জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ। তিনি বলেন, সরকারী বিরাট এই জায়গা বেদখল হতে চলেছিল। খুলনা বিভাগীয় কমিশনারসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সহযোগিতায় বিনোদন কেন্দ্র করা হচ্ছে। পার্কটি নির্মান কাজ শেষ হলে এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের এক আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হবে।
বিট্রিষ আমলে গাংনী শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার উত্তর-পুর্বে কাজলা নদীর পাশে ভাটপাড়া নীল কুঠি স্থাপিত হয়। সেখানে রয়েছে ইংরেজদের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থাপনা। কিন্তু সংরক্ষেণর অভাবে তা বিলিন হচ্ছিল। সম্প্রতি মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে সেখানে ডিসি ইকো পার্ক তৈরী করা হচ্ছে। যা এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের একটি অন্যতম স্থানে পরিণত হয়েছে।