সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা বাড়ছেই
গত এক বছরের ব্যবধানে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা রাখার পরিমাণ আরও বেড়েছে জানিয়ে ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড ২০১৬’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি)।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশিদের এক হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ জমা হয়েছে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে। অথচ বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে অর্থ জমার পরিমাণ কমেছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ থেকে জমার পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৫ কোটি সুইস ফ্রাঁ। এক সুইস ফ্রাঁর বিনিময়মূল্য ৮৬ টাকা হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
কিন্তু বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকগুলোতে ২০১৬ সালে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ৬৬ কোটি ১০ লাখ সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। পরবর্তী বছরে জমার পরিমাণ প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বা ২০ শতাংশ বেড়েছে।
এসএনবি জানায়, সুইজারল্যান্ডে মোট ব্যাংকের সংখ্যা ২৬১টি। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব থেকে এই ২৬১টি ব্যাংকেই অর্থ জমা রাখা হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১২ সালে বাংলাদেশের জমা অর্থের পরিমাণ ছিল প্রায় ২২ কোটি ৮০ লাখ সুইস ফ্রাঁ, অর্থাৎ প্রায় ১ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা। এরপর সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ থেকে অর্থ জমার পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।
এদিকে সুইস ব্যাংকগুলোতে প্রতিবেশী দেশ ভারতের অর্থ জমার পরিমাণ ধীরে ধীরে কমেছে। ২০১৫ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে ভারতের জমার পরিমাণ ছিল প্রায় ১২১ কোটি সুইস ফ্রাঁ। ২০১৬ সালে এসে এই অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৬৬ কোটি ৪০ লাখ সুইস ফ্রাঁতে।
সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ থেকে টাকা জমার পরিমাণ বেড়ে যাওয়াকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, যেকোনো অনিয়ম বন্ধ করা না গেলে তা আরও বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। দেশে বিনিয়োগ পরিবেশের ঘাটতি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে দেশ থেকে বিদেশে অর্থ নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।