সুনামগঞ্জে কালি মন্দিরের মূর্তি ভাংচুরের ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি Channel 4TV :
সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামে শ্রীশ্রী কালি মন্দিরের তালা ও দরজা ভেঙ্গে মন্দিরে প্রবেশ করে ৩টি মুর্তি ভাংচুর করার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলার হিন্দু বৌদ্ধ খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ ও উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষন শেষে তাহিরপুর সদরের চাল বাজারে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন,চিকসা কালি মন্দিরের মুর্তি ভাঙ্গার সাথে জড়িত সন্দহে বাবুল মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও আসল সন্ত্রাসীরা রয়েছে ধরাচোয়ার বাহিরে। বক্তারা আরো উল্লেখ্য করেন গত ৩০.০১.১৭ইং সোমবার রাত ১১টায় বাদাঘাট বাজারে প্রধানমন্ত্রীর পোষ্টার আগুনে পুরায় কামড়াবন্দ গ্রামের মৃত বদ মিয়ার ছেলে হাবিব সারোয়ার আজাদ,তার সহযোগী একই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে আলম শেখ (২০) ও বাদাঘাট গ্রামের শহিদুল্লার ছেলে রাজু মিয়া (২১)। এঘটনার প্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ঝুমুর তালুকদার বাদী হয়ে উপরের উল্লেখিত ৩জন সন্ত্রাসীকে আসামী করে গত ০১.০২.১৭ইং বুধবার রাত ৮টায় মামলা নং-৫ দায়ের করেন। মামলা দায়েরের ঘটনায় আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন ০২.০২.১৭ইং শুক্রবার রাত ২টায় বাদাঘাট বাজারের পার্শ্ববর্তী পৈলনপুর গ্রামের কালি মন্দিরের ২টি মূর্তি ভাংচুর করে। এঘটনায় ঝুমুর তালুকদার বাদী হয়ে থানায় আরো ১টি মামলা করেন। পৃথক ২টি মামলা দায়েরের পর পুলিশ রাজু মিয়াকে গ্রেফতার করলে সে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিলে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এঘটনায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সন্ত্রাসী হাবিব সারোয়ার আজাদ ও আলম শেখ গং। এবং গত ১১.০৩.১৭ইং শনিবার রাত ১২টায় উপজেলার দক্ষিন বড়দল ইউনিয়নের টুকেরগাঁও গ্রামের সার্বজনিন কালি মন্দিরের ১০টি মূর্তি ভাংচুর করে। এঘটনার প্রেক্ষিতে মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল বর্মণ বাদী হয়ে গত ১৩.০৩.১৭ইং সোমবার বিকেলে মামলা নং-৮ দায়ের করেন। প্রধানমন্ত্রীর পোষ্টার পুরানো ও মূর্তি ভাংচুরকারী আসামীদের বিরুদ্ধে পরপর ৩টি মামলা দায়ের করার পরও পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার না করায় ফুসে উঠে উপজেলার সর্বস্থরের জনসাধারণ। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এলাকার নেতাকর্মীরাসহ সাধারণ জনগন শুরু করে মানববন্ধন। এঘটনার পর পুলিশ প্রশাসন তৎপর হয়ে উঠলে সন্ত্রাসী হাবিব সারোয়ার আজাদ ও আলম শেখ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তার সহযোগী আলম শেখ দীর্ঘদিন পলাতক থেকে ও রাজু মিয়া জেল খেটে আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় ফিরে আসতে না আসতেই আবারও চিকসা গ্রামের কালি মন্দিরের ৩টি মূর্তি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল ০৩.০৭.১৭ইং সোমবার সকাল ১০টায় চিকসা শ্রীশ্রী কালি মন্দির কমিটির সভাপতি রনদা পুরকায়স্থ বাদী হয়ে মামলা নং-৩ দায়ের করেছেন। সেই সাথে প্রশাসন তাদের খুব দ্রæত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান বক্তরা। উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ পুরকায়স্থ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন-উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল,উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম,উপজেলা আওয়ামীলীগ তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক স্বপন কুমার দাস,উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা সাধারন সম্পাদক হাফিজ উদ্দিন,উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর খোকন,উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ আহবায়ক অনুপম রায়,আওয়ামীলীগ নেতা রঞ্জু মুখার্জী,সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি শাহীনুর তালুকদার,উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি সুষেন বর্মন,রায়পাড়া কালি মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক মনধীর রায় প্রমুখ।