পেসার শহীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র নিয়ে বিসিবিতে স্ত্রী
মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন, ঘর থেকে বের করে দেয়া, একাধিক মেয়ের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক, মেয়ে সন্তানকে অবহেলা ও গর্ভে থাকাকালীন নষ্ট করতে পেটে লাথি দেয়া। এরকম লিখিত অভিযোগ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) এসেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোহাম্মদ শহীদের স্ত্রী ফারজানা আক্তার।
রোববার সকালে মুন্সীগঞ্জের বাড়ি থেকে দুই সন্তান আরাফ ও আরহীকে সঙ্গে নিয়ে নিয়ে মিরপুরের বিসিবির কার্যালয়ে আসেন তিনি।
সাংবাদিক লাউঞ্জে কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর শহীদকে ফোন দিয়ে তিনি নিজেই তার বিসিবিতে আসার কথা জানান। শহীদ তখন ১০০ গজ দূরে একাডেমি ভবনে।
ফোনে শহীদ তার স্ত্রীকে বলেন, চলে না গেলে আর কোন দিন সংসার করবেন না। জবাবে ফারজানা বলেন, এসে নিয়ে যেতে। ব্যস্ততার কথা বলে শহীদ ফোন রেখে দেন।
পরে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী ডেকে নিয়ে শহীদের স্ত্রী’র ফারজানার সঙ্গে আলোচনায় বসেন।
বিসিবি সমস্যার সমাধান করতে না পারলে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন শহীদের স্ত্রী ফারজানা আক্তার। চ্যানেল আই অনলাইন তিনি বলেন: সন্তানদের দিকে তাকিয়ে আমি স্বামীর সংসার করতে চাই। বিসিবির মাধ্যমে একটা সমাধান চাচ্ছি। সমাধান না হলে আইনি পদক্ষেপ নেব।
ফারজানা আক্তার বলেন, ‘মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্ক করা শহীদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এখন যে মেয়ের সাথে সম্পর্ক সে মেয়ে ঢাকায় থাকে জানি। তবে তার সাথে আমার কথা হয়নি। ওই মেয়ের ফোন নম্বর নেই। এর আগে যত সম্পর্ক করেছে আমি ফোনে কথা বলে ভাঙার চেষ্টা করেছি। একটা ভাঙলে দুটো হয়ে যায়। একাধিক মেয়ের সাথে ওর সম্পর্ক। আমি চাই না ওর ক্রিকেট ক্যারিয়ার ধ্বংস হোক। চাই না মামলা করতে। তাই বিসিবিতে এসেছি। যদি সুরাহা হয়।’
বিসিবি সভাপতি বরাবর লেখা অভিযোগপত্রে শহীদের স্ত্রী বলেন: “শহীদ বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যেতেই থাকে। গত কয়েক মাস আগে আমার শাশুড়ির সঙ্গে ঢাকার একটি মেয়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। কিছুদিন আগে জানতে পারি ওই মেয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েছে। শহীদ মেয়েটিকে বাচ্চা নষ্ট করার কথা বলে কিন্ত আমার শাশুড়ি বলেন: ‘নষ্ট করার দরকার নেই। ও তো আমার নাতি/নাতনি হবে।’ শহীদ মেয়েটিকে বিয়ে করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। গত ২৩ জুন ঈদের তিন দিন আগে শহীদ ওর মা-ভাইকে বলে আমাকে যেন বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।না যেতে চাইলে দোতলার বারান্দা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। আমি ভয়ে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যাই।”
ফারজানা আক্তার বলেন, “আমাদের বিয়ের দেনমোহর ছিল দুই লাখ টাকা। শহীদ বলছে, ‘আমি সেখানে তোমাকে ৫-১০ লাখ টাকা দিব, তুমি চলে যাও’। ছেলেটাকে রেখে বিদেশ পাঠিয়ে দিতে চায়। আর মেয়েটাকে পেটে থাকা অবস্থায় নষ্ট করার জন্য লাথি মেরেছে। আমার ননদ বলছে, ‘আচ্ছা ভাবী কাজের মেয়ের মতো থাকবে। নারায়নগঞ্জ থাকবে আর আপনি বিয়ে করে ঢাকায় থাকবেন।’ তারপরও শহীদ রাজী হয় না।”
২০১১ সালের ২৪ জুন শহীদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় জানিয়ে ফারজানা বলেন, বিয়ের প্রথম তিনটি বছর তাদের বেশ ভালো যায়। জাতীয় দলে খেলার পর থেকেই ও (শহীদ) পাল্টে যায়।
শহীদ অবশ্য আগে থেকেই তার স্ত্রীর সকল অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। ফারজানা বিসিবিতে অভিযোগ জানানোর পর তাৎক্ষণিক শহীদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শহীদ বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে পাঁচটি টেস্ট ও একটি টি-টুয়েন্টি খেলেছেন।গত নভেম্বরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে খেলেন শহীদ। ইনজুরিতে পড়ায় এরপর তার মাঠে ফেরা হয়নি। হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পর পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন ২৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।