জনপ্রিয় সিরিয়ালের বাংলা তারকা বিক্রম প্রেসিডেন্সি কারাগারে
এখন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কারাগারে আছেন ভারতের বাংলা সিরিয়াল ও চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। গত ৭ জুলাই আলিপুর আদালত তাকে ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই জামিনের জন্য আবেদন করছেন বিক্রমের আইনজীবী।
গত ১৫ জুলাই দুজন প্রত্যক্ষদর্শী আদালতে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়ে এসেছেন। তাতে বিক্রমের উপরে চাপ আরও বেড়েছে। এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় বিক্রম বারবার নিজের বয়ান বদলেছেন। এর কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সংবাদ মাধ্যমকে তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিক্রম স্বীকার করেছেন আতঙ্কিত হয়ে তিনি বারবার বয়ান বদলেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, নিজের পেশাদার জীবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বিক্রম। তাই গ্রেফতারের আগে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সময় ভুল তথ্য দিয়েছেন।
গত ২৯ এপ্রিল বিক্রম চট্টোপাধ্যায় গাড়ি দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন। গাড়িতে এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জনপ্রিয় মডেল সোনিকা সিংহ চৌহান। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। ভোর ৪টা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতায় রাসবিহারী মোড়ের কাছে লেক মলের সামনে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুর পেছনে সেদিন গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে থাকা বন্ধু বিক্রমের বেসামাল ও বেপরোয়া আচরণকে দায়ি করেছে পুলিশ। বিক্রমের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। জানা গেছে, এরই মধ্যে আদালতে পুলিশের আবেদন গৃহীত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে বিক্রমের।
আদালতে পুলিশের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিক্রম দুর্ঘটনার আগে দু’টি পানশালায় দফায় দফায় মদ্যপান করেন। ফরেনসিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ওই রাতে বিক্রমের গাড়ির গতি একবারও ৯০-এর নিচে নামেনি। এক সময়ে তা ১১৫ পর্যন্ত উঠেছিল। দুর্ঘটনার ঠিক সাড়ে চার সেকেন্ড আগে গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার। দুই সেকেন্ড আগে ছিল ঘণ্টায় ৯৩ কিলোমিটার। দুর্ঘটনাটি ঘটার দেড় সেকেন্ড আগেও ব্রেক কষেননি বিক্রম। যেহেতু সামনের দিকে ধাক্কা লাগেনি, তাই গাড়ির এয়ারব্যাগও খোলেনি। বিক্রমের সিটবেল্ট বাঁধা থাকলেও সোনিকার ছিল না।
এই ঘটনার পর অনেকটা তাড়াহুড়ো করে স্টার জলসায় শেষ হয়েছে বিক্রম চট্টোপাধ্যায় অভিনীত জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘ইচ্ছে নদী’।