ফরহাদ মজহারের জবানবন্দির সঙ্গে তদন্তের তথ্যের গরমিল: বাতেন
কবি-প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহারের দেয়া জবানবন্দির সঙ্গে তদন্তে পাওয়া তথ্যের গরমিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন।
মঙ্গলবার দুপুরে ফরহাদ মজহারকে ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়।
সেখানে সাংবাদিকদের আব্দুল বাতেন জানান, ফরহাদ মজহার আদালতে যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, তার সঙ্গে পুলিশি তদন্তে পাওয়া তথ্যের যথেষ্ট গরমিল রয়েছে। এসব নিয়েই তাকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, তদন্তে দেখা গেছে ফরহাদ মজহার অপহৃত হননি।
তিনি যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কীভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়, সেটি ভেবে দেখা হচ্ছে বলেও জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার
গত ৪ জুলাই ফরহাদ মজহার নিজ জিম্মায় বাসায় ফিরেছেন। ঢাকার মহানগর হাকিম আহসান হাবীব তার জবানবন্দি রেকর্ড করে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তাকে নিজ জিম্মায় বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেন।
এ সময় আদালত ফরহাদ মজহারের কাছে জানতে চান, তিনি নিজ জিম্মায় বাড়ি যেতে চান কি না? জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই যেতে চাই।
পরে আইনজীবীর মাধ্যমে ফরহাদ মজহারের নিজ জিম্মায় মুক্তি চাওয়ার বিষয়ে শুনানি হলে আদালত তা মঞ্জুর করে।
ফরহাদ মজহারের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে কবি-প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহারকে চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়েছিল বলে জানায় পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশকে এ কথা জানিয়েছেন— পুলিশ তার এ বক্তব্য খতিয়ে দেখছে কথাগুল বলেন যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন।
মঙ্গলবার বেলা সোয়া একটার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান তিনি।
গত ৩ জুলাই -সোমবার ভোরে রাজধানীর শ্যামলীর বাড়ি থেকে ওষুধ কিনতে বের হওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য ফরহাদ মজহারকে আদালতে তোলা হয়।
দিনভর নানা জল্পনা শেষে নিখোঁজের ১৮ ঘণ্টা পর সোমবার রাতে নাটকীয়ভাবে যশোরের নোয়াপাড়ায় ঢাকাগামী একটি বাসে ফরহাদ মজহারের হদিস পায় র্যা ব।
ভোরে রাজধানীর নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার পর তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে তার পরিবার।
দিনভর নানা জল্পনা-কল্পনার পর সোমবার রাতে যশোরের নোয়াপাড়ায় হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করা হয়। খুলনায় এক হোটেল মালিকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে উদ্ধার করে র্যা ব। সেখান থেকে তাকে খুলনায় নিয়ে রাত দেড়টায় দিকে ঢাকার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের আগে খুলনার ফুলতলায় সংবাদ সম্মেলন করে র্যা ব।
খুলনা থেকে ঢাকায় আনার পর মঙ্গলবার সকালে প্রথমে তাকে আদাবর থানায় নেয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ও স্বজনরা। পরে রাজধানীর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ফরহাদ মজহারকে।
ব্রিফিংয়ে ডিবির ডেপুটি কমিশনার আব্দুল বাতেন জানান, ফরহাদ মজহার আদালতে জবানবন্দি দেয়ার পর জানা যাবে এটি অপহরণ নাকি স্বেচ্ছায় ভ্রমণ।