ছাতক-দোয়ারায় আ’লীগ, বিএনপিও জাপার তৃৃণমুলে নির্বাচনী হাওয়া
চান মিয়া, ছাতক (সুনামগঞ্জ):
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়াারাবাজার) আসনে আ’লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, খেলাফত মজলিস ও জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থীর নাম লোকজনের মূখে মূখে। এসব দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সভা-সমাবেশ ও মিছিল-মিটিংয়ের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের কাছে নিজেদের প্রার্থীতার কথা জানান দিচ্ছেন। এখানে বড় দু’দলের সহযোগি সংগঠনের সিংহ ভাগেরই অস্থিত্ব নেই। দু’জোটের মোট ৩৪দলের মধ্যে এখানের ৭টি দলের মধ্যে প্রার্থী হচ্ছেন ৫টি দলের। ১৪দলীয় জোটের প্রার্থীরা হলেন, সুনামগঞ্জ জেলা আ’লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ও সুনামগঞ্জ জেলা আ’লীগের সদস্য শামীম আহমদ চৌধুরী, দোয়ারা আ’লীগ নেতা ফরিদ আহমদ তারেক, সুনামগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি এডভোকেট অব্দুল মজিদ মাষ্টার, কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির নির্বাহী সদস্য ও সাবেক সুনামগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক আ.ন.ম. ওহিদ কনা মিয়া ও কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য ও দোয়ারা উপজেলা সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও ছাতক উপজেলা শাখার সাবেক সাধারন সম্পাদক এডভোকেট আবুল হাসান, লন্ডন প্রবাসি রুহুল আমিন। এদিকে ২০দলীয় জোটের প্রার্থীরা হচ্ছেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাতক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজান, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শফিক উদ্দিন, জামায়াতে ইসলামীর সিলেট মহানগরী শাখার কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম আল-মাদানী। এখানে এমপি মানিক ও পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী নিয়ন্ত্রিত আ’লীগের দু’টি গ্রুপ জাতিয় দিবসসহ বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচি পৃথক বলয়ে পালন করছে। তাদের অভ্যন্তরীন কোন্দল প্রায় দু’যূগ থেকে চলে আসছে। দু’গ্রুপেই রয়েছে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী কর্মী বাহিনী। নির্বাচনের দিনক্ষন যতই ঘনিয়ে আসছে দলীয় অভ্যন্তরীন কোন্দল ততই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। গত ১০টি সংসদ নির্বাচন ও একটি উপ-নির্বাচনসহ মোট ১১জন সংসদ সদস্যের মধ্যে এআসনে ৪বার আ’লীগ, ১বার বিএনপি, ১বার জাসদ, ৩বার স্বতন্ত্র ও ২বার জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমপি নির্বাচিত হন। এরমধ্যে আ’লীগ এমপিদের মধ্যে ১৯৭৩সালের ১ম সংসদ নির্বাচনে আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদ, ১৯৯৬সালের ১২জুনের ৭ম, ২০০৮সালের ৯ম ও ২০১৩সালের ১০ম নির্বাচনে মুহিবুর রহমান মানিক বিজয়ী হন। স্বতন্ত্র এমপিদের মধ্যে ১৯৭৩সালের উপ-নির্বাচন ও ১৯৭৯সালের ২য় নির্বাচনে এএইচএম আব্দুল হাই এবং ১৯৯৬সালের ৬ষ্ঠ নির্বাচনে কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বিজয়ী হন। জাতীয় পার্টির এমপিদের মধ্যে ১৯৮৬সালের ৩য় নির্বাচনে এএইচএম আব্দুল হাই ও ১৯৯১সালের ৫ম নির্বাচনে এডভোকেট আব্দুল মজিদ বিজয়ী হন। ১৯৮৮সালের ৪র্থ নির্বাচনে জাসদ থেকে ও ২০০১সালে অনুষ্ঠিত ৮ম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বিজয়ী হন। জানা গেছে, এআসনে অনেক রাজনৈতিক দলের অস্থিত্ব নেই। ১৪দলীয় জোটের মধ্যে আ’লীগ ও জাপা ছাড়া অন্যান্য আরো ১২টি দলের কোন অস্তিত্ব এখানে নেই। এভাবে ২০দলীয় জোটের মধ্যে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও জাগপাসহ ৫টি দল ছাড়া এখানে ১৫টি দলের অস্তিত্ব নেই। এদিকে ২০দলীয় জোট দীর্ঘদিন ক্ষমতা থেকে দূরে থাকায় একের পর এক মামলা-হামলায় জর্জরিত হয়ে অনেক নেতাকর্মী নিষ্ক্রিয় ও অনেকে চলে গেছেন বিদেশে। এরপরও সরকার দলের নব্য নেতাকর্মীর উৎপাত ও প্রশাসনের স্বজনপ্রীতির কারনে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা নিষ্ক্রিয় থাকলে ও তৃণমূলে রয়েছে তাদের শক্তিশালী ভোট ব্যাংক। বিএনপি মিলন ও মিজান গ্রুপ বলয়ে সভা সমাবেশ ও জাতীয় দিবসগুলো পৃথকভাবে পালন করছেন। এভাবে সরকার দলীয় মানিক ও কালাম গ্রুপে সভা সমাবেশ ও জাতীয় দিবস পৃথকভাবে পালন করছেন। আগামি সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বইতে শুরু করেছে আগাম নির্বাচনী হাওয়া। বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের মধ্যেও নির্বাচন নিয়ে চলছে নানামূখি আলোচনা-সমালোচনা। তবে দু’উপজেলার উন্নয়ন কর্মকান্ডই এবারের নির্বাচনে মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞমহল ধারনা করছেন। তারা বলেন, দু’উপজেলার কোন গ্রামীন সড়ক সংস্কার ও মেরামত না করায় এবারের নির্বাচনে এর প্রভাব পড়তে পারে।