আবারো বিদ্যালয়ে যেতে চায় দুই ভাই রুহান ও রায়হান
টি.আই সানি,শ্রীপুর(গাজীপুর)প্রতিনিধি গাজীপুরের শ্রীপুরের পশ্চিম আজুগীচালা গ্রামের দিনমজুর আব্দুর রাজ্জাকের জমজ দুই ছেলে রুহান(১৪),রায়হান (১৪)। জন্ম ও বেড়ে উঠা ছিল আর দশ জনের মতই। বিদ্যালয়ে ও ভর্তি হয়েছিলেন, প্রথম শ্রেনী থেকে চতুর্থ শ্রেনী পর্যন্ত দুই জমজ ভাই মেধা তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন।কিন্তু হঠাৎ ছন্দ পতন হল দুই ভাইয়ের জীবনে। শরীরে বেধে বসেছে নানাবিধ অসুখ। চিকিৎসকরা জানান,দু”জনেরই হয়েছে থ্যালাসেমিয়া নামক রোগ। পশ্চিম আজুগীচালা গ্রামের আসমত আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন,২০০৩ সালে তার দুই ছেলে জমজ হিসেবে জন্মগ্রহন করেন। ছোটকাল হতেই তার দুই ছেলেই অসম্ভব মেধাবী। কিন্তু চার বছর আগে হঠাৎ করে তারা দুই ভাই একসাথে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের নিয়ে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হলে তারা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে থ্যালাসেমিয়া রোগ সনাক্ত করে।এদিকে গত ৪ বছরে চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করতে তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া পাঁচ শতাংশ জমি বিক্রি করে বর্তমানে নি:স্ব। চিকিৎসকরা অপারেশনের ছাড়া এ রোগের আর কোন চিকিৎসা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন।কিন্তু তাদের পক্ষে এর ব্যবস্থা করতে না পারায় বর্তমানে বিনা চিকিৎসায় দিন দিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তার দুই সন্তান। অসুস্থ কিশোরের মা রেনোয়ারা বেগম বলেন,তার দুই সন্তান অসুস্থতার মধ্যেও বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করেন। মাঝে মাঝে লুকিয়ে লুকিয়ে স্কুলের কাপর পরে স্কুলে যাবার প্রস্তুতি নেয়, তবে একা একা চলতে পারেননা বিধায় যেতে পারেন না। বিনা চিকিৎসায় দিন দিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেখে তার খুব কষ্ট হয়।কিন্তু এখন কান্নাকাটি ও সৃষ্টিকর্তাকে ডাকা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই তাদের। পূর্ব গাজীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান বলেন,রুহান ও রাইহান দু”জনেই এ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছিল। কিন্তু অসুস্থ থাকায় গত ২ বছর যাবৎ বিদ্যালয়ে আসতে পারছে না। এ ছাড়াও দু”জনের পিতাও খুবই হতদরিদ্র। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা: সালেহ ফয়সাল বলেন,এ রোগের অন্যতম চিকিৎসা হচ্ছে বোনমেরা ট্রান্সপ্লান্ট,যা খুবই ব্যয়বহুল। দ্রুততম সময়ে তা করতে না পারলে দু”জনের জীবন হুমকীর মুখে পরবে।