প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক-জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে ইসির সংলাপ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক সংলাপের দ্বিতীয় ধাপে বুধবার প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে সংলাপ শেষ হয়েছে।
দুই দিনব্যাপী গণমাধ্যমের সঙ্গে ইসির সংলাপে ৭১ জন প্রতিনিধির অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। তবে জানা আজ অনেকেই সংলাপে অংশগ্রহণ করেননি।
আজ (বুধবার) ও বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমের সম্পাদক, বার্তা প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মতবিনিময় হবে।
আর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু হবে ২৪ আগস্ট থেকে।
ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, আজ প্রিন্ট মিডিয়া ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং আগামীকাল-বৃহস্পতিবার অনলাইন, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও রেডিওর প্রধানদের সঙ্গে বসবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। এসময় চার নির্বাচন কমিশনারও উপস্থিত থাকবেন।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে প্রতিদিন সকাল ১০টায় সংলাপ শুরু হয়েছে।
প্রিন্ট মিডিয়া ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মিলিয়ে ৩৭ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আর বৃহস্পতিবার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও এজেন্সির প্রধান সম্পাদক এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া, রেডিওর বার্তা প্রধানসহ ৩৪ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, আমন্ত্রিত ৭১ জনের মধ্যে বিটিভি, বাংলাদেশ বেতার ও প্রধান তথ্য কর্মকর্তাও রয়েছেন।
বুধবার অতিথিরা হলেন: নিউএইজ সম্পাদক নূরুল কবীর, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, নিউজ টুডে সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, ইত্তেফাকের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আশিষ সৈকত, জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, আমাদের সময়ের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ার, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, সংবাদের নির্বাহী সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, আমাদের অর্থনীতি সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, দিনকাল সম্পাদক রিজওয়ান সিদ্দিকী, মানবকণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আনিস আলমগীর, সকালের খবরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কমলেশ রায়, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, মহাসচিব ওমর ফারুক, বিএফইউজের অপর অংশের মহাসচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, কলামনিস্ট আবেদ খান, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, আফসান চৌধুরী, পীর হাবিবুর রহমান, কাজী সিরাজ, আনিসুল হক, আমানুল্লাহ কবীর, সাপ্তাহিক সম্পাদক গোলাম মর্তুজা, কলাম লেখক বিভুরঞ্জন সরকার, মাহবুব কামাল, সৈয়দ বদরুল আহসান, কলামনিস্ট সোহরাব হাসান ও প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার।
বৃহস্পতিবার আমন্ত্রিতরা (ইসির তালিকার ক্রমানুসারে)- বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন, এনটিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক খায়রুল আনোয়ার মুকুল, এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ জ ই মামুন, এটিএন নিউজের হেড অব নিউজ মুন্নী সাহা, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইখ সিরাজ, আরটিভির সিইও সৈয়দ আশিক রহমান, একুশে টিভির হেড অব নিউজ রাশেদ চৌধুরী, বাংলা ভিশনের হেড অব নিউজ মোস্তফা ফিরোজ, সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জুবায়ের, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির নির্বাহী সম্পাদক খালেদ মহিউদ্দীন, মাছরাঙা টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক রেজোয়ানুল হক রাজা, গাজী টিভির হেড অব নিউজ মেজবাহ আহমেদ, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, চ্যানেল ২৪ এর এডিটর ইনপুট তালাত মামুন, দেশ টিভির হেড অব নিউজ সুকান্ত গুপ্ত অলোক, যমুনা টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক ফাহিম আহমেদ, চ্যানেল নাইনের হেড অব নিউজ আমিনুর রশীদ, ভয়েস অব আমেরিকা বাংলাদেশ প্রতিনিধি আমির খসরু, বৈশাখী টিভির অশোক চৌধুরী, নিউজ টোয়েন্টিফোরের হাসনাইন খুরশিদ, ডিবিসির মনজুরুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক মুরসালীন নোমানী, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন উর রশিদ এবং বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া মাই টিভি, এশিয়ান টিভি, দীপ্ত, এসএ টিভি, মোহনা টিভি, দু’টি রেডিওর বার্তা প্রধানকেও মতবিনিময় সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানান জনসংযোগ পরিচালক।
বৈঠকের কার্যপত্রে দেখা যায়, কর্মপরিকল্পনার সাতটি বিষয় ছাড়াও প্রাসঙ্গিক অন্য বিষয়েও মতামত নেবে ইসি।
ইসি সূত্রে জানা গেছে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে:
বিদ্যমান ইংরেজি আইন কাঠামো বিশেষ করে ‘ দ্য রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার, ১৯৭২ এবং দ্য ডিলিমিটেশন অব কনস্টিটিউয়েন্সিস অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৬’ যুগোপযোগী করে বাংলা ভাষায় প্রণয়ন।
বিগত নির্বাচনসমূহের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অবৈধ অর্থ এবং পেশী শক্তির ব্যবহার রোধকল্পে আইনি কাঠামো সংস্কার সংক্রান্ত প্রস্তাবনা।
সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ কল্পে জনসংখ্যার পাশাপাশি ভোটার সংখ্যা, সংসদীয় এলাকার আয়তন, প্রশাসনিক অখণ্ডতা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহারের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ।
নির্বাচন প্রক্রিয়া যুগোপযোগী ও সহজীকরণের বিষয়ে আইনি কাঠামো ও প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন। প্রবাসী ভোটারদের ভোট দান নিশ্চিত করার বিষয়ে একটি আইন কাঠামোসহ প্রক্রিয়া প্রণয়নের জন্য প্রস্তাবনা।
কর্ম পরিকল্পনায় বর্ণিত অন্যান্য কাঠামোকে যুগোপযোগী করার প্রস্তাবনা।
নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য পরামর্শ।
ভোট কেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রম যুগোপযোগী করার জন্য পরামর্শ।
নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন এবং নিবন্ধত রাজনৈতিক দল নিরীক্ষা সংক্রান্ত প্রস্তাবনা।
সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মপরিকল্পনার অতিরিক্ত কোনো প্রস্তাবনা।
একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইন সংস্কার, সীমানা পুননির্ধারণ অধ্যাদেশসহ সাতটি বিষয়ে ইসির কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মতামত নেয়া হয়েছে। ধারবাহিক সংলাপে সব অংশীজনের বক্তব্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সরকারের কাছেও পাঠানো হবে।