মিয়ানমারের চলমান সংঘর্ষে সেনাবাহিনীই উস্কানিদাতা
মিয়ানমারে চলমান বিদ্রোহী রোহিঙ্গা ও বার্মিজ মিলিটারি মধ্যে সংঘর্ষ বাড়ছে মিলিটারির জন্য বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। মিলিটারিরা এই চলমান সংঘর্ষে উস্কানিদাতা হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করছে তারা। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর মাসব্যাপী রাখাইন চরমপন্থী ও বার্মিজ মিলিটারির জ্বালাতনের ফল মংডু, বুতিদং ও রথেদংয়ের পুলিশ পোস্টে রোহিঙ্গাদের ২৫ আগস্টের সহিংসতা।
তবে বার্মিজ মিলিটারির এমন উস্কানিমূলক আচরণ সামরিকীকরণের কৌশল বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। সেই সঙ্গে নর্দান রাখাইন রাজ্যে ভয় ও উত্তেজনা ছড়িয়ে দেওয়াও একটি লক্ষ্য ছিলো এমন আচরণের মধ্যে।
বিশ্লেষকদের দাবি এই প্ররোচনা মূলত ছড়ানো হয়েছিলো মিয়ানমারে গঠিত কফি আনানের অ্যাডভাইজরি কমিশনের পতনের জন্য। এই কমিশন ২৫ আগস্টে অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
সেই কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান করা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চলাচলের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার প্রদান করা ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে। মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির সরকার যখন সেটা মেনে নিতে যাচ্ছেন, ঠিক সেই সময়েই এমন আচরণকে পরিকল্পিত বলেই মনে করছে অনেক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এই কমিশন গঠিত হয় সাবেক জাতিসংঘ মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে। এই কমিশন গঠিত হওয়ার সময়েই মিয়ানমারের বেশ কিছু পার্টি যেমন তাতমাদও, ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, মা বা থা ইসলামোফোবিক মনক অর্গানাইজেশন এবং রাখাইন ন্যাশনালিস্ট যৌথভাবে সেটাকে অস্বীকার করেছিলো। আর ঠিক যেদিনই মিয়ানমারের সরকার কমিশনের দেওয়া সুপারিশগুলোকে স্বাগত জানালো সেদিনই এই হামলার ঘটনা ঘটলো,এটা মোটেও আকস্মিক ঘটনা নয় বলে করছেন অনেকে।
একটু পেছনে তাকাতে গেলে দেখা যায়, ৯ আগস্টে তাতমাদও ও রাখাইন আইনপ্রণেতাদের একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এরপরই ১০ আগস্টে সেখানে নতুন সেনাবাহিনী গঠন করা হয়। ১৩ আগস্টে বিক্ষোভ করে রাখাইন চরমপন্থীরা। ১৫ই আগস্টে রথেদংয়ে এক কৃষকের উপর নির্যাতন চালানো হয়। ১৮ আগস্টে সেখানেই আরেক রোহিঙ্গা পরিবারের উপর চালানো হয় নির্যাতন। ১৯ আগস্টে রথেদংয়ে এক জেলের শিরশ্ছেদ করা হয়। এর আগে ৪ আগস্ট সেই এলাকায় চালানো হয় পুলিশি অভিযান। তারও আগে নিষিদ্ধ করা হয় রোহিঙ্গাদের কেনাকাটা। ২৩-২৪ আগস্ট রথেদংয়ে চলে গণগ্রেপ্তার। এরপরে ২৫ আগস্টে গিয়ে রথেদং বুতিদং ও মংডুতে পুলিশ পোস্টে হামলা চালায় রোহিঙ্গারা।
সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর বক্তব্য মিলিটারিরাই মূল উস্কানিদাতা এসব সংঘর্ষের পেছনে।