ঈদে বেড়াতে পারেন সুনামগঞ্জের হাওরের প্রাকৃতিক সুর্ন্দযের মাঝে
জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
দেশের উত্তর-পূর্ব দিগন্তের সীমান্ত ঘেরা হাওরের রাজধানী হিসাবে পরিচিত সুনামগঞ্জ জেলা। শুধু হাওরেই নয় জীব-বৈচিত্র,সুন্দর্যে সমৃদ্ধ হাওর,নদী,পাহাড়,প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর শৈল্পের কারুকার্যে ভরপুর করে দিয়েছেন বিধাতা এ জেলায় নিজের হাতেই। জেলার ১১টি উপজেলা জামালগঞ্জের পাকনার হাওর,হালির হাওর,জগন্নাথপুরের নলুয়ার হাওর,বিশ্বাম্ভরপুর,ধর্মপাশা,দিরাই,শাল্লা ও তাহিরপুরের টাংগুয়ার হাওর,শনির হাওর,মাটিয়ান হাওর সহ গুরুত্বপূর্ন প্রায় ৪শতাধিক(২০একরের উর্ধে) হাওর রয়েছে। এই সব হাওরের রুপ বৈচিত দেখতে প্রতিদিন হাজার হাজার সুন্দর্য পিপাসু দর্শনার্থীদের আগমনে মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে হাওর গুলোতে। জানাযায়,হাওরের নীলাভ রুপালী জলরাশি শুধু নয় জলজ ও স্থলজ নানা ধরনের উদ্ভিদের পাশাপাশি এ অঞ্চলে জন্ম নিয়েছে সম্পদে সমৃদ্ধ বাউল,লোককবি,সাধক মরমী কবি হাসন রাজা,রাধরমন,শাহ আব্দুল করিম ও তাদের স্মৃতি বিজরিত স্থান,কিছু নিদর্শন ও তাদের গান। আর তাদের লেখা গান নির্দশন গুলো বিশ্ববাসীর কাছে দিন দিন হয়ে উঠেছে জনপ্রিয় ও আকর্শনীয়। পর্যটকরা টাংগুয়ার হাওর সহ বিভিন্ন হাওরে এসে নীল জররাশি মাঝে নৌকায় বসে,কেউ বা হাওরের পানিতে সাতার কেটে গোসল করে,কেউ বা রাতে হাওরের শীতল হাওয়া ও পূর্নিমার আলোয় রাত্রী যাপন,কেউ বা হাওরে সুর তুলছেন বাউল,মরমী কবি সাধকদের জনপ্রিয় গান গুলো। হাওরের মাছ,অতিথি পাখি,সুন্দর্য আর সোয়াম ফরেষ্টের জন্য বিখ্যাত এ জেলায় হাওরের সৌন্দর্য ভ্রমন পিপাসুদের হাতছানি দিয়ে ডাকলেও প্রচার-প্রচারনা আর সু-ব্যবস্থাপনা না থাকায় এতদিন পর্যটকদের তেমন একটা নজর কাড়তে পারে নি। সেই সাথে পর্যটন শিল্প স্থাপনের প্রতি সরকারের আগ্রহ না থাকায় বিপুল পরিমান রাজস্ব্য আদায় থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। কিন্তু সুন্দর্য পিপাসু পর্যটক ও দর্শনার্থীরা সুনামগঞ্জের সীমান্ত নদী,পাহাড়,পাহাড়ী ঝর্না,হাওর,বাওরের হিজর,করচ,নলখাগরা বনের প্রাকৃতিক সুন্দর্য,নানান প্রজাতির বনজ,জলজ প্রানী আর হাওর পাড়ের বসবাসকারী মানুষের জীবন-জীবিকা খুজেঁ খুজেঁ বের করে নৈসর্গিক সৌর্ন্দযে মুগ্ধ হচ্ছেন। স্থানীয় বাসীন্দা সাদেক আলী,রফিকুল ইসলাম,তোজাম্মেল হক নাছরুম বলেন,পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা দেশ-বিদেশের ভ্রমন পিপাসুদের সামনে তুলে ধরতে টাংগুয়ার হাওরে গত বছরের ১৬-১৭সেপ্টেম্ভর দু-দিন ব্যাপি টাংগুয়ার হাওরে জল জ্যোৎ¯œা উৎসবের আয়োজন করেছিল তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন। ব্যাপক সাড়াও পেয়েছে এ উৎসবের আয়োজকগন। বিশেষ করে তাহিরপুর উপজেলার আর্ন্তজাতিক রামসার সাইট খ্যাত জীব-বৈচিত্র,সম্পদে ও সুন্দর্যে ভরপুর টাংগুয়ার হাওর অনন্য বৈশিষ্ট্য থাকায় দেশ-বিদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম,সাইদুল,সোহাগ জানান,বর্ষায় হাওরে প্রাকৃতিক ভাবে জন্ম নেয়া হিজল,করছের ডাল গুলো বর্ষার অথৈই জলে ডানা কাটা পরীর মত ভাসমান আর শুষ্ক মৌসুমে পাতা বিহীন ডালাপালা গুলো ভাস্কর্যের রুপ নেয়। আর শীতে মৌসুমে হাজার হাজার দেশী-বিদেশী পাখির মিলন মেলা ও সবুজের সমারোহ চোখ জুরানো সুন্দর্যে মন প্রান খুলে উপভোগ করছেন বেড়াতে আসা সুন্দর্য পিপাসু পর্যটক ও দর্শনার্থীরা। বাদাঘাট বাজার বনিক সমিতির সভাপতি ও যুবলীগ সভাপতি সেলিম হায়দার,বাদাঘাট বাজার বনিক সমিতির সাধারন সম্পাদক ও উত্তর বড়দল ইউনিয়নের যুবলীগ সভাপতি মাসুক মিয়া,ছাত্রলীগ নেতা রাহাদ হায়দার সহ স্থানীয়রা জানান,দেশ-বিদেশের পর্যটকগন এখন একা না এসে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে আসছেন হাওরের সুন্দর্য উপভোগ করতে। জেলার টাংগুয়ার হাওর,বারেকটিলা,যাদুকাটা নদী,হাওলি জমিদার বাড়ি,জয়নাল আবেদিন গার্ডেন(শিমুল বাগান),সীমান্তের আদিবাসি পল্লøী,মেঘালয় পাহাড়ের বুক চিড়ে বয়ে আসা ছোট বড় ২০টি ঝরর্না সহ ৪৬টি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তাই পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা দেশ-বিদেশের ভ্রমন পিপাসুদের সামনে তুলে ধরতে পর্যটন সমৃদ্ধ স্থান গুলো কে নিয়ে বাস্তবমূখী,র্দীঘ মেয়াদী সুচিন্তিত পরিকল্পনার মাধ্যমে হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলার একটি আকর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্রে রুপান্তরিত করার সর্ব মহলে দাবী উঠেছে। বেড়াতে আসা শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জনমেজর সহ তার বন্ধুরা জানান-হাওর,নদী,পাহাড়,প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে অপরুপ সৌন্দর্যের রুপের রানী যাদুকাটার তুলনা হয় না। এত সুন্দর পাহাড়ী নদীর সম্মিলন খুব একটা দেখা যায় না। হেমন্তে গায়ের বধুরা বালুচড় পাড়ি দিয়ে যাদুকাটার সচছ পানিতে গোসল করে ফেরার পথে বেঁজা গায়ে কলসি কাখে বাড়ি ফিরার সময় রেখে যায় তাদের ভেঁজা পায়ের পদ চিহ্ন। এ যেন কবি মাইকেল মদূসধন দত্তের কপোতাক্ষ নদ।তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা,থাকা,খাওয়ার ভাল ব্যবস্থা না থাকার কারনে বেড়াতে আসা লোকজনের কষ্ট হচ্ছে। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান,হাওরেই সুনামগঞ্জ জেলা কে তুলে ধরেছে দেশ-বিদেশের সুন্দর্য পিপাসু দর্শনার্থী ও পর্যটকদের কাছে। হাওরের সুন্দর্যই অভিভূত দর্শনার্থী ও পর্যটর্করা তাই হাওর কে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্প স্থাপন করা সময়ের দাবী জনগনের দাবীতে পরিনত হয়েছে। হাওর বাসীর স্বার্থে বর্তমান সরকার ৬বছর পূর্বে তাহিরপুর বাসী কে দেওয়া পর্যটন শিল্প স্থাপনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি পর্যটন শিল্প গড়ার দাবী জানাচ্ছি।