রোহিঙ্গা মুসলিম গ্রামের ৭ শতাধিক বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে: এইচআরডব্লিউ
মিয়ানমার থেকে পাওয়া নতুন উপগ্রহ-চিত্রে দেখা যাচ্ছে একটি রোহিঙ্গা মুসলিম গ্রামের ৭ শতাধিক বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সূত্র বলছে, মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ যাদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা মুসলিম।
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের খুঁজে বের করায় নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে কর্তৃপক্ষ সেখানকার মুসলমানদের আহ্বান জানায়।
এদিকে, তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তুলবেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার আসন্ন মিয়ানমার সফরে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
রাষ্ট্র পরিচালিত গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলে মংতুতে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির সদস্যদের বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এ সময় তাদের ধরতে স্থানীয় মুসলমানদেরকে সহযোগিতার জন্য লাউড স্পিকারে আহ্বান জানানো হচ্ছে।
এদিকে, মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, মিয়ানমার থেকে পাওয়া নতুন উপগ্রহ-চিত্রে দেখা যাচ্ছে যে একটি রোহিঙ্গা মুসলিম গ্রামের ৭ শতাধিক বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে যা ভাবা হয়েছিল, ধ্বংসলীলার মাত্রা তার চেয়ে অনেক বেশি।
রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন পীড়ন শুরুর পর থেকে ঘরহারা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার মানুষ যাদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা। তারা রাখাইনের বিভিন্ন শিবিরে বাস করছে।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, দেশটির সরকার তাদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সহায়তার অভিযোগ আনার পর তারা ত্রাণ সরবরাহ স্থগিত করে দিয়েছে।
মিয়ানমার সরকার শনিবার জানিয়েছে, গত সপ্তাহের সহিংসতার পর রাখাইনে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় ২ হাজার ৬শ'রও বেশি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
সরকার এর দায় চাপাচ্ছে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির ওপর।
এ পরিস্থিতিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়েপ এরদোগান মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছেন।
শুক্রবার ইস্তাম্বুলে ঈদ উপলক্ষে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, যারা রাখাইনের গণহত্যার বিষয়ে চোখ বন্ধ করে আছেন তারা কার্যত এ নির্মমতাকে সমর্থন করছে।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু বলেছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেবে তার সরকার— রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে এ বছরই একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে।
এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মিয়ানমার সফরের সময় দেশটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে বলে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারে যাচ্ছেন মোদি। রাখাইন পরিস্থিতি মোকাবেলায় কীভাবে মিয়ানমারকে সাহায্য করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হবে বলে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।