বালুখালিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়কেন্দ্র হচ্ছে, ত্রাণ সেখানেই দেয়া হবে
কক্সবাজারের বালুখালীতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গার জন্য আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মাহমুদ।
এদিকে, রাখাইনে সেনা অভিযানের মধ্যে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা আরও ৯ রোহিঙ্গা চিকিৎসা নিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এরই মধ্যে তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ।
নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন বলে জানান তিনি।
খালেদ বলেন, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে ঢুকে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে— তাই তাদের এক জায়গায় রাখতে শুধুমাত্র বালুখালী থেকে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বালুখালীতে আশ্রয় কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে এবং রোহিঙ্গাদের সেখানে ত্রাণ ও থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে, এতে রাস্তাঘাটে ঘোরাফেরা করতে থাকা রোহিঙ্গারাও ত্রাণের জন্য নিজেরাই বালুখালীতে চলে যাবে।
যেখানেই ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের সরানো যাচ্ছে না জানিয়ে জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা বলেন, আলটিমেটল, তাদের নির্দিষ্ট স্থানে নেয়ার আমাদের ‘গোল’ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই চেষ্টা করছি, বালুখালী ছাড়া অন্য কোথাও ত্রাণ না দিতে।
এদিকে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের মধ্যে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা আরও নয় রোহিঙ্গা চিকিৎসা নিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
শনিবার রাত সোয়া ১০টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে ওই নয়জনকে হাসপাতালে আনা হয়। গত ১৭ দিনে মোট ৮৬ জন রোহিঙ্গা চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নেয় যাদের অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ বা বিস্ফোররণে দগ্ধ হয়েছেন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে আসার পর একজন গত ২৬ আগস্ট এবং একজন ৩০ আগস্ট মারা যান।
শনিবার রাতে আসা আহতরা হলেন- মো. হামিদ হোসেন, মো. তাহের , আবুল কালাম , মোছাম্মৎ আদিজা , ফাতেমা , বশির উল্লাহ , মঞ্জুর রহমান , করিম উল্লাহ ও শামসুল আলম।
তাদের মধ্যে শামসুল আলম টেকনাফে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। অন্যরা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন বলে এএসআই আলাউদ্দিন জানান।
আহতদের মধ্যে আটজন টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে মেডিসিন (এমএসএফ) হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয় বলে মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে।
গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কয়েকটি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সেখানে সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করে। সেই থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশ অভিমুখে নতুন করে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে।