সুনামগঞ্জ সীমান্ত চোরাচালানীদের স্বর্গরাজ্য:৬টন চোরাই কয়লা জব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক,সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্র নগর,বালিয়াঘাট,টেকেরঘাট,চাঁনপুর ও লাউড়গড় সীমান্ত চোরাচালানীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। গতকাল সোমবার (১১,০৯,১৭ইং) রাত সাড়ে ১১টায় টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্প এলাকার টেকেরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত পুলিশ ক্যাম্পের সামনে দিয়ে ভারত থেকে চোরাই পথে চোরাচালানী জিয়াউর রহমান জিয়া,আব্দুল হাকিম ভান্ডারী,রতন মহলদার,মানিক মিয়া,ইদ্রিস আলী ও সোহেল মিয়া গং কয়লা পাচাঁরের সময় ১০২বস্তা (৬টন) চোরাই কয়লা আটক করেছে বিজিবি। কিন্তু বীরেন্দ্র নগর বিজিবি ক্যাম্পের বাগলী এলসি পয়েন্ট এলাকা দিয়ে আজ ১২.০৯.১৭ইং মঙ্গলবার সকাল ৫টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত রংগাছাড়া গ্রামের চোরাচালানী মোস্তফা মিয়া হরফে মস্তো মিয়া ৪২টি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে প্রায় ৫শত টন চুনাপাথর বীরেন্দ্রনগর বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবস্থিত রংগাছড়া নদী দিয়ে ওপেন পাচাঁর করলেও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এব্যাপারে বড়ছড়া ও বাগলী শুল্কষ্টেশনের বৈধ কয়লা ও চুনাপাথর ব্যবসায়ীরা জানান,সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে উপজেলার বালিয়াঘাট ও টেকেরঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে পাচাঁরকৃত চোরাই কয়লার প্রতি বস্তা থেকে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের নামে ৭০টাকা,টেকেরঘাট কোম্পানী কমান্ডারের নামে ৩০টাকা,থানার নামে ৫০টাকা,কাস্টমসের নামে ৫০টাকা,দুই সাংবাদিকের নামে ২০টাকা ও রাস্তা মেরামতের নামে ৫০টাকাসহ মোট ২৮০টাকা চাঁদা নিচ্ছে চাঁদাবাজি মামলার (জিআর-১৬৩/০৭ইং) জেলখাটা আসামী বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী দুধের আউটা গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া ও তার একান্ত সহযোগী বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী লাকমা গ্রামের চোরাচালানী আব্দুল হাকিম ভান্ডারী,ইদ্রিস আলী ও তিতু মিয়া। এছাড়াও এই লাকমা এলাকা দিয়ে ভারত থেকে চুনাপাথর পাচাঁর করে প্রতিট্রলি চুনাপাথর থেকে বিজিবির ২ক্যাম্পের নামে ২৫০টাকা,থানার নামে ১২০টাকা,সাংবাদিকদের নামে ৮০টাকা,কাস্টমসের নামে ১০০টাকাসহ ৫৫০টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করাসহ টেকেরেঘাট ও লাকমাছড়া দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন ৩শ থেকে ৪শত ট্রলি বল্ডার ও সিংগেল পাথর পাচাঁর করার জন্য প্রতিট্রলি পাথর থেকে বিজিবির ২ক্যাম্পের নামে ১০০টাকা,থানার নামে ৭০টাকা,সাংবাদিকের নামে ২০টাকাসহ ২০০টাকা চাঁদা নিচ্ছে তারা। অন্যদিকে বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের বাগলী,সুন্দরবন ও লামাকাটা এলাকা দিয়ে উপজেলার উত্তরশ্রীপুর ইউনিয়নের রংগাছড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে চোরাচালানী মোস্তফা মিয়া হরফে মস্তো মিয়ার নেতৃত্বে প্রতিদিন ওপেন চুনাপাথর ও কয়লাসহ মদ,গাজা পাচাঁর করা হচ্ছে। বীরেন্দ্র নগর বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার মশিউর ও সিপাহী আফসার এর সহযোগীতায় প্রতিটন চুনাপাথার পাচাঁর করার জন্য বীরেন্দ্র নগর বিজিবি ক্যাম্পের নামে ২০০টাকা,সাংবাদিকদের নামে ১০০টাকা,থানার নামে ১৫০টাকা,সিও সোর্স পরিচয়ধারী ২জনের নামে ১০০টাকা,কাস্টমসের নামে ১০০টাকাসহ মোট ৮শ টাকা চাঁদা নিচ্ছে চোরাচালানী ও বিজিবি ক্যাম্পের সোর্স পরিচয়ধারী চোরাচালানী মস্তো মিয়া। একই ভাবে বিজিবি ক্যাম্পের নামে চাঁদা নিয়ে বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী চাঁনপুর গ্রামের একাধিক চোরাচালান মামলার আসামী আবু বক্কর,রফিক মিয়া গং লাউড়গড় সীমান্তের যাদুকাটা নদী দিয়ে অবাধে কয়লা,পাথর ও মদ,গাজাসহ চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলা,রাজাই,নয়াছড়া ও চাঁনপুর এলাকা দিয়ে গরু,মদ,গাঁজা,চুনাপাথর ও কয়লা পাচাঁর করছে।
বাগলী এলাকা দিয়ে ভারত থেকে চুনাপাথর পাচাঁরের ব্যাপারে বীরেন্দ্র নগর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার সাঈদ বলেন,চুনাপাথর পাচাঁরের বিষয়টি আমার দেখার বিষয় হলে আমি দেখব।
সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক নাসির উদ্দিন চোরাই কয়লা আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধের ব্যাপারে আমার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে,এব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।