ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুল আলমের বিরুদ্ধে ১ কোটি ১২লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরে অভিযোগ দায়ের :
ছনি চৌধুরী,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ।।
নবীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুল আলম (ইলাক উদ্দিন) এর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ১ কোটি ১২ লক্ষ টাকা জালিয়াতি করে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য প্রতিষ্ঠানের অভিবাবক প্রতিনিধিসহ গন স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরে দাখিল করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চ্যলের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় ১হাজার ২শত ছাত্র/ছাত্রী নিয়ে প্রতিষ্টিত এ বিদ্যালয়ে ২০১৩ সালের আগষ্ট মাসে সাবেক প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান অবসরে যাওয়ার সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পান বর্তমান প্রধান শিক্ষক বদরুল আলম (ইলাক উদ্দিন)। ২০১৪ সালেই তিনি দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহন করেন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তিনি নানা দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৩ সাল থেকে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন থেকে আসা অর্থ এ পর্যন্ত তিনি কোন ব্যাংকেই জমা করেননি। সম্পূর্ন টাকা পকেটে রেখে খরচ করে ভাউচার বানিজ্য করে সে টাকা হজম করে যাচ্ছেন। এমনকি (খন্ডকালীন শিক্ষদের) সময় মতো বেতন ভাতা না দেয়া, ভবিষ্যত তহবিল, গ্রাচুইটিসহ কোন কিছুই প্রদান করেন না। এতে অনেক শিক্ষকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তার প্রভাব ও স্বেচ্ছাচারিতার কারনে অতিষ্ট হয়ে অনেক শিক্ষক অন্যত্র চলে গেছেন। আরো কোন কোন শিক্ষক চলে যাওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে বলে ও জানাগেছে। এই পরিবেশে শিক্ষার মান দিন দিন কমে যাচ্ছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ছাত্রদের অভিবাবকরা। তিনি একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক থাকা অবস্থায় তিনিই কি ভাবে ইনাতগঞ্জ পাঞ্জেরী জুনিয়র হ্ইাস্কুল নামে একটি ব্যক্তিগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন এ নিয়ে এলাকায় রয়েছে নানা বিতর্ক। এবং তিনি তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠিত স্কুলেই বেশি সময় ব্যয় করেন বলে ও জানা গেছে। লন্ডন প্রবাসী অধ্যুশিত এলাকা হওয়ার সুবাধে অনেক প্রবাসীরা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য মোটা অংকের টাকা অনুদান দিয়ে থাকেন। সে টাকা প্রধান শিক্ষক তার পছন্দের দুয়েক জন অভিবাবক সদস্যদের নিয়ে নাম মাত্র কাজ দেখিয়ে ভাউচারের মাধ্যমে পুরো টাকা হজম করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সময় শুন্য পদে শিক্ষক লাইব্রেরিয়ান নিয়োগের সময় মোটা অংকের টাকা নিয়ে নিয়োগ বানিজ্য করার ও অভিযোগ রয়েছে। জে.এস.সি ও এস. এস.সি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে রেজিষ্টেশন ও ফরম পুরনের সময় ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে প্রতি বছর অতিরিক্ত টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি বিদ্যালয়ে কোচিং নিষিদ্ধ থাকলে তিনি কমিশনের নিয়ে অবাধে স্কুলে কোচিং করার সু- ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি কয়েক লক্ষ টাকা মুল্যের দামী গাড়ি, দামী একটি মোটরসাইকেলসহ অনেক জায়গা জমির মালিক বনে গেছেন। রাতারাতি তিনি কি ভাবে এতো সম্পদের মালিক বনে গেছেন এ নিয়ে ও এলাকায় রয়েছে নানা গুঞ্জন। এ সব বিষয়ে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ বিদ্যালয়ের কয়েকজন অভিবাবক প্রতিনিধি গন-স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরে দাখিল করেছেন। এর অনুলিপি পরিচালক, হিসাব ও নিরীক্ষা বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তর ঢাকা, চেয়ারম্যান সিলেট শিক্ষা বোর্ড, উপ-পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, সিলেট অব্জল, আঞ্চলিক কর্মকর্তা দুদক সিলেট অব্জল, জেলা প্রশাসক হবিগঞ্জ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নবীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ প্রেসক্লাব। এ ব্যাপারে ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের হিসাব সম্পুর্ন অভিবাবক সদস্যদের নিয়েই করা হয়ে থাকে। আমি একা কোন কিছুই করছি না। এবং আমার হাতে রেখে কোন কিছুই করছি না ব্যংকিং ভাবেই করা হচ্ছে। আমার বিরুদ্বে দুর্ণীতির যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে তাহা সত্য নয়। এর আগে ও অভিযোগ করা হয়েছিলো তদন্তে প্রমানিত হয়নি। আমি একটি জুনিয়র হাই স্কুল করেছিলাম বর্তমানে আমি এর সাথে আর কোন সম্পৃক্ত নেই। আমার বিরুদ্ধে একটি মহল আমাকে ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগে আছে।