আ.লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন না ১০০ মন্ত্রী-এমপি
আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক অনেক মন্ত্রী-এমপি বা হেভিওয়েট প্রার্থীরাও মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন। নির্বাচন করার সুযোগ হারাতে পারেন তারা। দলের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে এ আভাস পাওয়া গেছে। দলের জরিপ, বিভিন্ন সংস্থার মাঠ রিপোর্ট ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ভোটযুদ্ধের রণকৌশল থেকেই এমনটি করা হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কঠিন নির্বাচন ধরেই শেখ হাসিনা দলের ঐক্য এবং মনোনয়নের ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন।
শেখ হাসিনার দু’টি মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে যারা সংসদে রয়েছেন, তাদের এক তৃতীয়াংশই মনোনয়ন পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে হাইকমান্ড এসব সংসদ সদস্যের আসনে বিকল্প প্রার্থী যাচাই বাছাই করছেন। নির্বাচনে বিকল্প প্রার্থী হিসাবে অনেককে সবুজ সঙ্কেতও দেয়া হয়েছে। বর্তমান মন্ত্রিসভার অন্ততপক্ষে ৪/৫ জন প্রবীণ সদস্য আছেন, যারা স্বেচ্ছায় মনোনয়ন দৌঁড় থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। একাধিক প্রবীণ মন্ত্রী নিজ নিজ পুত্রের পক্ষে মনোনয়ন পাইয়ে দেয়ার চেষ্টায়রত রয়েছেন। ১৯৯৬-০১ এবং ২০০৮-১৩ মেয়াদের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যেও বেশ ক’জন নিজ নিজ এলাকায় উত্তরাধিকারী তৈরিতে দৌড়ঝাঁপ অব্যাহত রেখেছেন।
পাশাপাশি ওই দুই মেয়াদের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে যারা সর্বশেষ নির্বাচনে মনোনয়ন হাতছাড়া করেছেন তাদের অনেকে আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যেই বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে যোগ্যদের মূল্যায়ণের কথা জানিয়েছেন। মন্ত্রিসভায়ও যোগ-বিয়োগের ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই মন্ত্রিসভাকে ঢেলে সাজাবেন। যাদের অযোগ্য ও বিতর্কিত মনে করবেন তাদের বাদ দেবেন। তিনি বলেন, বিতর্কিত কাউকেই আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে না।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই অনেক দূর এগিয়েছে। খসড়া তালিকা যাচাই বাছাই চলছে এমন কথা জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনেরর একটি প্রার্থী তালিকা আগে থেকেই তৈরি করে রাখবে।
এদিকে দায়িত্বশীল সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তে দেখা যায়, বিভিন্ন এজেন্সির মাঠ পর্যায়ের সরেজমিন প্রতিবেদনে বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীদের পাশাপাশি সম্ভাব্য বিকল্প প্রার্থীদের অবস্থানও ফুটে উঠেছে। প্রতিবেদনে প্রায় এক তৃতীয়াংশ মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় সংসদ সদস্য হিসাবে অবস্থান অত্যন্ত শোচনীয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা যায়, এসমস্ত আসনে বিকল্প প্রার্থীদের বিষয়েও সুপারিশ রাখা হয়েছে। পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনগুলোর তথ্যচিত্র প্রধানমন্ত্রীকেও হতাশ করেছে। সর্বশেষ আরেক দফা সমীক্ষার পর সংসদীয় বোর্ড বসবে। হাইকমান্ড স্বয়ং পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তিনশত আসনে প্রার্থীদের একটি খসড়া তালিকা তৈরি করে রাখা হচ্ছে।