রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওআইসির হস্তক্ষেপ কামনা
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওআইসির হস্তক্ষেপ কামনা করলেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। রোহিঙ্গারা যাতে নিজেদের আবাসভূমিতে ফিরতে পারে সে বিষয়ে সহায়তা করতে মুসলিম বিশ্ব ও আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।
কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় ওআইসির প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্মেলনে, রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, রোহিঙ্গারা অস্তিত্বের সংকট, নিষ্ঠুরতা আর উৎখাতের শিকার।
সীমান্ত পার হয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ঢুকে পড়ায় বাংলাদেশের মারাত্মক সংকটের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কার কথাও তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।
কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানার প্যালেস অব ইনডিপেনডেনসে ইসলামি দেশগুলোর শীর্ষ সংগঠন ওআইসির প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্মেলনে, বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। সম্মেলনে তার বক্তব্যে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যা দ্রুত সমাধানে ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন।
এ সময় তিনি বলেন, নাগরিকত্বের অধিকারসহ সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত তারা।
রোহিঙ্গারা যাতে নিজেদের ভূমিতে ফিরে গিয়ে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
মানবিক কারণে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ আশ্রয় দিচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এই সংকটের সরাসরি বিরূপ প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের ওপর। বিপুল সংখ্যক অসহায় রোহিঙ্গাদের বোঝা বহনের মতো মারাত্মক সংকটের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
সম্মেলনের ফাঁকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে, পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা যাতে সীমান্তের মিয়ানমার অংশে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি "সেইফ জোনে" থাকতে পারে সেবিষয়টি নিশ্চিত করতে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
এ সময় তার দেশের পক্ষ থেকে আরো দশ হাজার টন ত্রাণ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন তুর্কী প্রেসিডেন্ট। বিশ্বর আন্যান্য দেশ ও সংস্থা যেন বাংলাদেশের মাধ্যমে রোহিঙ্গের জন্য ত্রাণ পাঠায় সে জন্য উদ্যোগ নেবেন বলেও ওরদোয়ান জানান।
এদিকে, সম্মেলনের ফাঁকে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান দমন অভিযান নিয়ে করনীয় ঠিক করতে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও।
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন অভিযান বন্ধে চাপ সৃষ্টি এবং নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়াতে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানান তারা। আস্তানা সম্মেলন থেকে, রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমার সরকারকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়া হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান।