রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে সাত দফা সুপারিশ পেশ
মিয়ানমারে চলমান রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ, তাদের জন্য বাফার জোন তৈরিসহ সাত দফা সুপারিশ করা হয়েছে জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।
মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় মানবাধিকার কমিশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, মিয়ানমারে গণহত্যার ঘটনা ঘটছে সেখানে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। এসব ঘটনায় আসিয়ান, কমনওয়েলথ সচিবালয়ের মানবাধিকার–বিষয়ক ইউনিট, ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মহাসচিব, ইউনিসেফ,ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনসহ (আইওএম) আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে ‘অনুপত্র’ পাঠানো হয়েছে।
মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১.রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করা।
২. জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গাদের জন্য বাফার জোন তৈরি করা।
৩. জাতিসংঘের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৪. বাংলাদেশে বসবাস করা ‘১০ লাখ’ রোহিঙ্গার মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদান ।
৫.কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি না করে কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন করে মিয়ানমার রাষ্ট্র কর্তৃক রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান করা।
৬. প্রয়োজনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক বাণিজ্যিক, অস্ত্র রপ্তানির ক্ষেত্রে অবরোধ আরোপ করা।
৭. মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে যে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে মৌলিক অধিকার বঞ্চিত করেছে, এসব কারণে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার করা।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের পদ্ধতিগত সংস্কার করতে হবে। কারণ, সারা বিশ্বের সব রাষ্ট্র এক দিকে অবস্থান নেবে আর দু-একটি রাষ্ট্র অপরদিকে থাকবে, এটা হতে পারে না। এমন ধরনের ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন।
মিয়ানমারে গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) দেশটির শাসকদের বিচার দাবি জানান কাজী রিয়াজুল হক।
তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে দ্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) হামলা করেছে, নাকি মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে এমনটি ঘটানো হয়েছে, সেটা তদন্ত করে দেখা যেতে পারে। আর এই আরসা কারা, সেটাও দেখতে হবে। এভাবে একপেশে অভিযোগ দিয়ে গণহত্যা চালানোর দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিসি ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) বিচার হতে পারে।