রাজশাহী কারাগার: জামিন হওয়ার পরেও বের হতে বন্দীদের বিড়ম্বনা
বিশেষ প্রতিবেদক :
আদালত থেকে আইনি প্রক্রিয়ায় জামিন পাওয়ার পরেও রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার হতে বন্দীদের বের হতে বিভিন্ন ধরণের বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয় বলে সদ্য কারামুক্ত বন্দীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে। বন্দীরা অভিযোগ করে খবর২৪ঘণ্টাকে জানান, আইনি প্রক্রিয়ায় আদালত থেকে জামিন হওয়ার পরেও কারা কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তার রোষানলে পড়তে হয়।
যাদের অর্থ ঘুষ দেওয়া ছাড়া বাইরে বের হওয়া যায়না। আর চাহিদা অনুযায়ী ঘুষ না দিলে আবার পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে কারাড়ারে যেতে হয়। তাই পুনরায় আটক হওয়ার ভয়ে কারা কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে অর্থ ঘুষ দিয়েই বের হতে হয়।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে সদ্য কারাগার থেকে বের হওয়া কিছু বন্দী এমনই অভিযোগ করেছেন । তবে আবার জেলে গেলে শাস্তির ভয়ে নাম প্রকাশ করতে তারা অনিচ্ছুক।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এসব কারামুক্ত বন্দী অভিযোগ করে জানান, রাজশাহী কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় আদালতের মাধমে কোন বন্দীর জামিন হলে তাকে নিয়ম মাফিক বাইরে বের করে দেওয়ার কথা। কিন্তু যদি এক্ষেত্রে জামিন প্রাপ্ত বন্দী কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি বা মাদক ব্যবসায়ী হয় তাহলে তাকে নিময় মাফিক কারাগার থেকে বের করে দেওয়া হয়না তাকে আলাদাভাবে বসিয়ে রেখে বের করার জন্য টাকা দাবি করা হয়। চাহিদা অনুযায়ী দাবিকৃত টাকা না দিলে তাকে আবার পুলিশ দিয়ে আটক করানোর ভয় দেখানো হয়।
যদি তারা টাকা দিতে রাজি না হয় তাহলে তাকে কারাগার থেকে বের করতে বিভিন্ন ভাবে হয়রাণি করা হয়।
হয়রাণিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ওই বন্দীকে অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়, জামিনের কাগজে নাম ভুল ও মামলার বিভিন্ন তথ্যে গড়মিল এসবসহ নানাবিধ অজুহাত দেখানো হয়। আর টাকা দিতে রাজি হলেই সব ঠিক হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে কোনকিছু ভুল থাকে না দায়িত্বে থাকা এক ডেপুটি জেলারের কাছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
কারাগারের সিআইডি ও মুন্সির মাধ্যমে এসব অনিয়ম করে থাকেন কারা কর্তৃপক্ষ।
এমনও অভিযোগ রয়েছে যে, জামিনের কাগজ আদালত থেকে কারাগারে সময়মত পৌঁছালেও শুধুমাত্র টাকা না দেওয়ার কারণে তাকে পরের দিন সকালে ছাড়া হয়। আবার তাকে বিভিন্নভাবে হয়রাণিও করা হয়।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক বন্দী বলেন, আমার জামিনের খবর শুনে পরিবারে লোকজন বাইরে অবস্থান করছিল। কিন্তু কাগজ কারাগারে সময়মত পৌঁছালেও আমাকে ওইদিন ছাড়া হয়নি। শুধুমাত্র টাকার জন্য পরের দিন সকালে ছাড়া হয়েছে।
শুধু এ অভিযোগ তার নয় কারাগারের সামনে বন্দী স্বজনদের জন্য অবস্থানরত অনেক মানুষের সাথে কথা বলে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে টাকা দিয়ে নিজের বন্দী স্বজনকে কারাগার থেকে বের করে নিয়ে এসেছেন বলে অপেক্ষমান অনেক বন্দীর স্বজনদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, কেন্দ্রীয় কারাগারের যে সমস্ত কারা কর্মকর্তা ও কারারক্ষীদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ উঠেছিল তারা সবাই এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে বলে কারা সূত্র জানায়।
কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুনের মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।