বিধবার ঘরে ডুকে গ্যাড়াকলে কুমারীডাঙ্গা হাইস্কুলের সভাপতি কামাল। অত্যাচারে অতিষ্ট এলাকবাসি।
কুমারীডাঙ্গা থেকে ফিরে মেহেরপুর প্রতিনিধি : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কুমারডাঙ্গা গ্রামে মধ্যে রাতে এক বিধবা মহিলার বাড়িতে গিয়ে গ্যাড়াকলে পড়েছে কুমারীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কামাল হোসেন। রবিবার গভীর রাতে বিধবা ঐ মহিলার বাড়িতে স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে বাড়ির সিমানা প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে পালিয়ে যায় কামাল হোসেন। এ ঘটনায় কুমারীডাঙ্গা গ্রামে চাঞ্চল্য’র সৃষ্টি হয়েছে। এসব ঘটনায় মুখ খুলতে স্থানীয়দের নানা ভাবে কামাল হোসেনের ক্যাডার বাহিনী। এ ঘটনার পর থেকে বিধবা ঐ মহিলা তার বাড়িতে তালা মেরে পার্শবর্তী জেলার একটি গ্রামে অবস্থান করছে। স্থানীয়রা জানান,কুমারীডাঙ্গা গ্রামের সবেদ আলী (ছদ্দনাম) সরকারী চাকুরীরত অবস্থায় গত ৩/৪ বছর পূর্বে মারা যায়। পরে এক মেয়েকে পার্শবর্তী এলাকায় বিয়ে দেওয়ার কারনে ছোট মেয়েকে নিয়ে কুমারীডাঙ্গা গ্রামে বসবাস করে আসছে ঐ বিধবা মহিলা। সোমবার মধ্যেরাতে কামাল হোসেন তার দুজন সহযোগীকে বাইরে রেখে ঐ বিধবা মহিলার ঘরে প্রবেশ করে। এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে পালিয়ে যায় কামাল হোসেন। স্থানীয়রা আরো জানায়,কামাল হোসেনের চাপে ঐ বিধবা মহিলা পার্শবর্তী একটি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে।
ঐ বিধবা মহিলার প্রতিবেশিরা জানান, স্বামীর পেনশন সুবিধা পায় এসব ঘটনায় পেনশন বন্ধ হওয়ার ভয়ে মুখে কুলুপ এটেছে বিধবা মহিলা। এদিকে অনৈতিক ঘটনার মুখ না খুলতে মুনছের আলীর ছেলে শাহাবুলকে হত্যার হুমকী দিচ্ছে কামাল হোসেন সহ তার ক্যাডার বাহিনী। শাহাবুলের পরিবার জানান,কুমারীডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে আইনালের মোবাইল ফোনে অব্যাহত ভাবে হুমকী দিচ্ছে। কামাল বাহিনীর ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছে অনৈতিক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা। অত্যাচারে অতিষ্ট ভুক্তভুগীরা কামাল বাহিনীর দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি করেছে। গাংনী থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান,কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঐ বিধবা মহিলার বক্তব্য জানতে তার বাড়িতে গেলে মুল ফটকে তালা ঝুলতে দেখা যায়। একারনে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নী। অভিযুক্ত কামাল হোসেন বলেন,আপনারা যা পারেন তাই লেখেন। কে এই কামাল হোসেন ? কামাল হোসেন সিন্দুরকৌটা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। গত ১০ বছর পূর্বে মাঠে দিনমুজুর ও পরে গ্রামে গ্রামে হাড়ি পাতিল বিক্রি করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো। ২০০৮ সালে আওয়ামীলী ক্ষমতায় আসার পর থেকে অবৈধ ভাবে খালবিল দখল করে বালি উত্তোলন সহ নানা অপকর্মের মাধ্যমে আওয়ামীলীগের নেতা বনে যান। এরপর থেকে কামাল হোসেনের উত্থান শুরু হয়। তেমন কোন পড়ালেখা না জানলেও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কুমারীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। এরপর শুরু হয় নিয়োগ বানিজ্য। নিয়োগ বানিজ্য ও খালবিল দখল করে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক হন। এরপর থেকে কুমারীডাঙ্গা এলাকায় একক অধিপত্য বিস্তার লাভ করে। কামাল হোসেনের অত্যাচারের প্রতিবাদ করায় সিন্দুরকৌটা গ্রামের এক যুবককে অস্ত্র নিয়ে গুলি করতে আসেছিলো বলে নাটক সাজায়। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় ঐ যুবক কে। পুলিশের কাছে ঐ যুবক জানায়,কামাল বাহিনীর অত্যাচারের প্রতিবাদ করায় পিস্তুল দিয়ে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হাজতবাস করানো হয়েছে। কামালের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে পুলিশ দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ করেন কয়েকজন।,কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এলাকার নিরিহ মানুষকে হয়রানী করার অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।