মুন্সীগঞ্জ-৩ সদর আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থী মাঠে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।
মুন্সীগঞ্জ-৩ সদর আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থী মাঠে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এক সময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মুন্সীগঞ্জে এখন আর তাদের আগের দাপট নেই।
পর পর দুবার ক্ষমতায় আসায় এ আসনে আওয়ামী লীগের অবস্থান অনেকটাই সুসংহত।
মুন্সীগঞ্জ সদর আসন এখন সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণায় মুখরিত।
নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে স্থানীয় জনগণের ধারণা। এক্ষেত্রে দুই দলেরই যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নের ওপর জয়-পরাজয় নির্ভর করবে।
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে (মুন্সীগঞ্জ সদর-গজারিয়া) আওয়ামী লীগের তিনজন শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন— বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আনিসুজ্জামান আনিস এবং সাবেক এমপি এম ইদ্রিস আলী।
মৃণাল কান্তি দাসের দাবি এ আসনে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করার জন্য আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন তাকেই দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী।
এলাকায় তিনি গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। পিছিয়ে নেই আনিসুজ্জামান আনিসও। তিনি চরাঞ্চলসহ নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি বাড়িতে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। একবার পৌর মেয়র এবং বর্তমানে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান আনিস এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার সখ্য রয়েছে অনেক আগে থেকেই। এম ইদ্রিস আলী ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির সিনিয়র শামসুল ইসলামকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন। কিন্তু দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে পরের নির্বাচনে তিনি আর নির্বাচনে আসেননি। এমনকি তিনি এলাকা থেকেও দীর্ঘদিন দূরে ছিলেন। বর্তমানে তিনি আবার এলাকায় এসে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচনী এলাকা তিনি চষে বেড়াচ্ছেন। এম ইদ্রিস আলীও দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তিনিই পাবেন। তবে আওয়ামী লীগের এ তিন নেতাই সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচনে দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষেই তারা সমবেতভাবে কাজ করবেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশায় প্রচারণা চালাচ্ছেন মীর কাদিম পৌরসভার পর পর দুই বারের মেয়র মো. শহিদুল ইসলাম শাহিন। তার দাবি দল তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হবেন। এ ছাড়া প্রার্থী হতে পারেন সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছেলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ফয়সল বিপ্লব। তার দাবি দল তাকে মনোনয়ন দিলে পৌরসভায় যেমন বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন, তেমনি এমপিও নির্বাচিত হবেন।
বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এ আসনে মাঠে রয়েছেন সাবেক উপমন্ত্রী ও জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই। তিনি পর পর পাচবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন এ আসনে। তার দাবি তার আমলে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আবদুল হাই বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাকে এই আসন থেকে মনোনয়ন দিলে তিনি বিপুল ভোটে পাস করতেন। তাকে এখান থেকে মনোনয়ন না দেওয়ায় সে বছর এ এলাকার জনগণ অভিমান করে ভোট কেন্দ্রে যায়নি। দল এবার তাকেই এ আসন থেকে মনোনয়ন দেবে বলে তিনি শতভাগ আশাবাদী। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন এ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। এ ছাড়া এ আসনে বিএনপির শক্ত প্রার্থী হতে পারেন সাবেক মন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য এম শামসুল ইসলামের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম। বিএনপির নেতা-কর্মীদের দাবি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিপুল ভোটে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হবেন। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে জেলা সাধারণ সম্পাদক হাজী আবদুল বাতেন ও আরিফুজ্জামান দিদারের নাম শোনা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই তারা ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন।