বেনাপোল-খুলনা কমিউটার ট্রেন এখন চোরাচালানিদের নিরাপদ রুট
শহিদুল ইসলাম,বেনাপোল প্রতিনিধি।। বেনাপোল-যশোর-খুলনা রুটে চলাচলকারী কমিউটার ট্রেন এখন চোরাচালানিদের নিরাপদ রুট। এই রুটের কমিউটার ট্রেনে চোরাচালান অবাধ করতে সক্রিয় শক্তিশালী একটি সেন্ডিকেট।
ট্রেনগুলোতে প্রতিদিন পাচার হচ্ছে কোটি কোটি টাকার মাদক, অস্ত্র, সোনা, কাপড়, কিসমিস, চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য। চোরচালানিদের দৌরাত্ম্যে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিদিন এই রুটে ৬০০ যাত্রী যাতায়াত করে। সকাল ৬টায় একটি কমিউটার ট্রেন খুলনা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। বেনাপোল থেকে যশোর হয়ে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায় সকাল ৯টায়। অপর একটি ট্রেন খুলনা থেকে বেলা ১২টায় ছেড়ে বেনাপোলে পৌঁছে আড়াইটায়। বিকাল সাড়ে তিনটায় সেটি বেনাপোল থেকে ছেড়ে যশোর হয়ে খুলনার উদ্দেশে রওয়ানা হয়। বেনাপোল, নাভারন, ঝিকরগাছা, যশোর ও নওয়াপাড়া থেকে চোরাকারবারী সিন্ডিকেট সদস্যরা ট্রেনে উঠে বেনাপোলে পৌঁছে। ফিরতি ট্রেনে তারা বস্তায় করে ফেনসিডিল, হেরোইন, অস্ত্র, চিনি, কিসমিস, মসলা, কাপড়, প্রসাধন সামগ্রী ও শুকনা মরিচ নিয়ে যায়। এসব পণ্য ট্রেনের বগিগুলোর অধিকাংশ জায়গা দখল করে রাখা হয়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন এ রুটে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অবৈধভাবে আনা এসব পণ্য বহনে ব্যবহার করা হয় নারীদের। কোনো নারী টাকার বিনিময়ে আবার কেউ নিজেরাই সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে কাজ করেছে।
জানা যায়, ট্রেনে দায়িত্বরত জিআরপি পুলিশ বিষয়টি জেনেও জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় না। যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনে টহলরত পুলিশ চোরাচালানিদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েই সন্তুষ্ট। চোরাচালানিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা-তো দূরের কথা উল্টো তাদের মালপত্র পাহারা দেয় রেল পুলিশ। যশোর রেল স্টেশন মাস্টার শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা যাত্রীদের ভালো সেবা দিতে কাজ করছি। চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য রেল পুলিশ রয়েছে। এটা তাদের কাজ। ’ কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের ডেপুটি কমিশনার আ. সাদেক জানান, গত মাসে বোনপোল-যশোর যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে ৯ মণ আতশবাজি জব্দ করা হয়। এ রুট এখন চোরাচালানিদের অভয়রাণ্যে পরিণত হয়েছে। পোর্ট থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, চোরাচালান প্রতিরোধে কমিউটার ট্রেনে অভিযান চালানো হচ্ছে। মাঝেমধ্যে বড় বড় চালান ধরা হচ্ছে এমন রেকর্ডও থানায় রয়েছে। এ বিষয়ে রেল পুলিশকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।