দুর্নীতিবাজদের ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিজেদের দুর্নীতির বাইরে রাখতে হবে গাংনীতে দুদক কমিশনার আমিনুল ইসলাম
এম এ লিংকন, জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর : দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম বলেছেন, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে দুর্নীতিবাজদের ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিজেদেরকে দুর্নীতির বাইরে রাখতে হবে। দুর্নীতি করা ও এ কাজে সহযোগীতা করা একই ধরনের অপরাধ। রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ সমাজের সকল শ্রেনী পেশার মানুষকে দুর্নীতি প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে।
রোববার বেলা ১১ টার সময় গাংনীর সন্ধানী মেডিকেল কলেজের সভা কক্ষে আয়োজিত গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বব্য এসব কথা বলেন তিনি।
“আওয়াজ তুলুন” এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে এ গণ শুনানীর আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বর্তমানে এ কমিশন দুর্নীতি থেকে দেশকে বের করে আনার চেষ্টা করছে। এজন্য সকল মহলের সহযোগীতা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দুদক থেকে একশ’টি মামলার মধ্যে ৩৭ মামলা প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে। বাকী মামলাগুলো তথ্য প্রমান থাকার পরেও অজ্ঞাত কারনে হেরেছে। দুদক তার কাজের গতি আনতে ৯শ অফিসারকে দেশে ও বিদেশে থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা দুর্নীতির স্থান চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। সমস্যাগুলো কিভাবে ঘটছে তার সমাধানে দুদক কাজ করছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন ও তাদের কাজকর্ম কি সেটা তুলে ধরে দুদক কমিশনার আমিনুল ইসলাম আরো বলেন, দেশ থেকে দুর্নীতি দমণ ও দুর্নীতিকারীদের আইনের আওতায় আনতে দুদক কমিশন কাজ করছে। দেশে দুর্নীতি একটি ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে কাজ করছে দুদক। দুর্নীতি এক কান থেকে হরেক কান পৌছাতে সমস্যা আরো জটিল হয়। ডালপালা বেড়ে আরো সংকট তৈরী হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের দুটি দিক রয়েছে একটি প্রতিরোধ ও আরেকটি প্রতিকার। এ কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর হাজার হাজার অভিযোগ পড়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশ থেকে বর্তমানে ৭২ শতাংশ দুর্নীতি কমানো হয়েছে। আমরা কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ নেবোনা। যাদের বিরুদ্ধে সুনিদির্ষ্ট অভিযোগ নেবো তাদের কোর্টে সোপর্দ করা হবে। কোর্ট তাদের শাস্তির ব্যবস্থা নেবে। সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে মতবিনিমিয় করে দুর্নীতির চিত্রগুলো নিয়ে ব্যবস্থ নিচ্ছি আমরা। তিনি বলেন সমাজের দুর্নীতি গুলো গ্রহনের জন্য (১০৬) টোল ফ্রি একটি হটলাইন খোলা হয়েছে। সেখানে ৫ জন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছে। অভিযোগ গুলো হটলাইনের মাধ্যমে তাৎক্ষনিকভাবে দেওয়ার অহবান জানান তিনি। সেগুলো সাথে সাথে সমাধান ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (প্রতিরোধ) মনিরুজ্জামান, খুলনা বিভাগের উপপরিচলক ড. আবুল হাসান, দুদক কমিশনারের একান্ত সচিব নুরুজ্জামন, সমন্বিত কুষ্টিয়া অঞ্চলের সমন্বয়কারী আব্দুল গাফ্ফার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান। এসময় গাংনী উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মুহাঃ আবু জাফর, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামরুল হাসান। গণশুনানিতে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক অংশ নেন। এসময় সরকারী অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তারা তাদের দুর্নীতির জবাব দেন। এদিকে নানা অনিয়মনের অভিযোগে সাংবাদিক ও স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে গাংনী সহকারী কমিশনার ভুমি দেলোয়ার হোসেন। যোগদানের পর থেকে অবৈধ ভাবে আর্থিক লেনদেন ছাড়া নামজারি,খাজনা,পচড়া সহ সেবা না পাওয়ার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া ভুমি সংক্রান্ত সেবা নিতে আসা ভুক্তভুগীদের সাথে অসৌজন্য মুলক আচরনের অভিযোগ করে গণ শুনানীতে অংশগ্রহনকারীরা।