গাংনীতে কাজীর বিরুদ্ধে ভূয়া নিকাহ্ রেজিষ্ট্রীর অভিযোগ
এম এ লিংকন,মেহেরপুর প্রতিনিধি ঃ গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউপির মনোনিত নিকাহ্ রেজিষ্টারের বিরুদ্ধে ভূঁয়া নিকাহ্ রেজিষ্ট্রীর অভিযোগ পাওয়া গেছে।সরকারীভাবে প্রদত্ত নিকাহ্ রেজিষ্টারের ভলিয়মে নিকাহ্ রেজিষ্ট্রী না করে স্থানীয়ভাবে ছাপানো ভলিয়মে বিয়ে/ নিকাহ্ রেজিষ্ট্রী করে হাজার হাজার টাকা বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।ইউপির নিকাহ্ রেজিষ্টার জুগিরগোফা গ্রামের নুহু নাজিউল্লাহ্র (কলেজে অধ্যয়নরত) অবর্তমানে তার বাবা রাইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ধর্মীয়) আব্দুস সাত্তারের সহযোগিতায় ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে নিয়োজিত সহকারী নিকাহ্ রেজিষ্টারদের মাধ্যমে হর-হামেশায় ভূঁয়া বাল্য বিয়ে রেজিষ্ট্রী করে যাচ্ছে।
সহকারী রেজিষ্টার সহড়াবাড়ীয়ার গ্রামের বাবুল আক্তার, ষোলটাকা গ্রামের মহিদুল ইসলাম ও চেংগাড়া গ্রামের কলেজ প্রভাষক আব্দুল গনিকে স্থানীয়ভাবে ছাপানো নিকাহ রেজিষ্ট্রী বহি সরবরাহ করে দীর্ঘদিন যাবত সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গোপনে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ভূয়া বাল্য বিয়ে রেজিষ্ট্রী করে আসছেন।এমনকি মেয়ে অথবা ছেলের অনুপস্থিতিতে অবৈধ বিয়ে সম্পাদন করে থাকেন।
জানা গেছে, উপজেলার জোড়পুকুরিয়ার গ্রামের মুকুল হোসেনের একাদশ শ্রেণির কলেজ পড়–য়া নাবালিকা মেয়ে রিতা খাতুনকে মিথ্যা চাকুরির প্রলোভন দিয়ে একই গ্রামের মৃত ময়নাল হোসেনের ছেলে কামরুজ্জামান খোকন গাংনীর একটি বাসায় আটকিয়ে রেখে মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করে এবং ভিডিও ধারন করে। ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া ভয়ভীতি দেখিয়ে দেহভোগ করে আসছিল। এব্যাপারে মেয়ের বাবা মুকুল হোসেন মেয়েকে না পেয়ে গত ৫ অক্টোবর,১৭ তারিখে গাংনী থানায় জিডি করেন যার নং-২৪০। পরে মেয়ে রিতা কৌশলে পালিয়ে এসে গাংনী থানায় খোকন ও তার সহযোগী উপজেলার বাহাগুন্দা গ্রামের গোলামের ছেলে সন্ত্রাসী,একাধীক মামলার আসামী রফিজুল ওরফে লাল মিয়ার নামে ১০ অক্টোবর,১৭ তারিখে ধর্ষন মামলা দায়ের করে।এদিকে এই অপহরণ ও ধর্ষন মামলা থেকে রক্ষা পেতে কামরুজ্জামান ওরফে খোকন উক্ত কাজী অফিসে নিকাহ রেজিষ্টারকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে কণে রিতার অবর্তমানে ভূঁয়া রেজিষ্টারে ব্যাকডেটে গত ১৮ জুন,১৭ তারিখে বিয়ে রেজিষ্ট্রী করেছে।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে জুগিরগোফা গ্রামের নিকাহ্ রেজিষ্টারের (নুহু নাজিউল্লাহ) বাড়ীতে গিয়ে কাজীর অনুপস্থিতিতে সাবেক নিকাহ রেজিষ্টার তার বাবা আব্দুস সাত্তার সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে এসব অনিয়মের কথা স্বীকার করেন। সরকারী প্রদত্ত ভলিয়ম ব্যবহার না করে নকল ভলিয়ম বহির ৬০ নং পাতা ব্যবহার করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অবৈধ বিবাহ পড়ানোর কথাও স্বীকার করেন।সেখানে দেখা যায়, নকল ভলিয়মের ৫৭ নং পৃষ্ঠা অজ্ঞাত কারনে বাদ রখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন , যদিও আমার ছেলের নামে লাইসেন্স করা তবে আমিই মূলত নিকাহ রেজিষ্টারের কাজ করে থাকি।তিনি বলেন,এসব লেখালেখি হলে আমার ছেলেটার বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। সহকারী কাজী সহড়াবাড়ীয়ার (নিয়ম বহির্ভূত) বাবুল আক্তার বলেন,এসব বিষয়ে আপনারা এত জানতে চাইবেন না। সবইতো জানেন।এসব না করলে আমরা চলবো কিভাবে।
এসব অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার সাথে জড়িত নিকাহ রেজিষ্টারের লাইসেন্স বাতিলসহ হোতাদের বিরুদ্ধে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে এলাকার সচেতনমহল।