দুর্গাপুরে ২২ লাখ টাকা নিয়ে ভার্কের তিন কর্মকর্তা লাপাত্তা
রাজশাহীর দুর্গাপুরে বেসরকারী এনজিও সংস্থা ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টারের (ভার্ক) প্রায় ২২ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছে সংস্থার তিন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ ঘটনায় ভার্ক’র দুর্গাপুর শাখার ব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান বাদী হয়ে তিন জনকে আসামী করে বৃহস্পতিবার রাতে দুর্গাপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পর থেকে খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধার ও আসামীদের ধরতে একাধিক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর পৌর সদরের শিবপুর রোডে অবস্থিত বেসরকারী এনজিও সংস্থা ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টারের (ভার্ক) হিসাব রক্ষক আতাবুর রহমান, সিনিয়র সুপরভাইজার বেলায়েত হোসেন ও কেয়ারটেকার কাম গার্ড সুজন আলী গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে অফিসের নিজস্ব তহবিলের ২১ লাখ ৩২ হাজার ৪৪৬ হাজার টাকা, ১ টি মোটরসাইকেল ও ১ টি বাইসাইকেল এবং অফিসের গুরুত্বপুর্ন কাগজপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর তাদের বাড়িতেও খোজ নেয় ভার্ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাদের কোন হদিস না পেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বৃহস্পতিবার রাতে দুর্গাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন শাখা ব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান। মামলার আসামীরা হলেন, অফিসের হিসাব রক্ষক বাগমারা উপজেলার খোদ্দকোড় গ্রামে নাসের আলীর পুত্র আতাবুর রহমান (৩২), সিনিয়র সুপারভাইজার নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার রাংতোড় গ্রামের বেলায়েত হোসেন (৩২) ও কেয়ারটেকার কাম গার্ড দুর্গাপুর উপজেলার সায়বাড় গ্রামের দুলাল হোসেনের পুত্র সুজন আলী (২৫)।
শাখা ব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান জানান, গত ১১ অক্টোবর তিনি তানোর শাখার অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন। ৬ নভেম্বর পুণরায় তিনি দুর্গাপুর শাখায় ফিরে আসেন। এ সময় তিনি অফিসের হিসাব নিকাশ পর্যালোচনা করে গড়মিল দেখতে পান। বিষয়টি নিয়ে ৭ নভেম্বর বিকেলে হিসাব রক্ষক আতাবুর রহমান ও সিনিয়র সুপারভাইজার বেলায়েত হোসেনকে চার্জ করেন তিনি। কিন্তু কাগজে কলমে টাকার হিসাব দেখালেও খোয়া যাওয়া টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেদের কাছেই গচ্ছিত রেখেছিল তারা। টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হলে ওই দিন রাতেই অফিসের হিসাব রক্ষক আতাবুর রহমান, সিনিয়র সুপারভাইজার বেলায়েত হোসেন ও কেয়ারটেকার কাম গার্ড সুজন আলী যোগসাজশ করে অফিসে তালা মেরে পালিয়ে যায়। তারপর থেকে আর তাদের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। এমনকি তাদের ব্যবহুত মোবাইল ফোন গুলোও বন্ধ পাওয়া গেছে।
শাখা ব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান আরো জানান, বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই তিন জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর থেকেই পুলিশ আসামীদের ধরতে ও খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যহত রেখেছে।
দুর্গাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান জানান, মামলার আসামীরা পরস্পর যোগসাজশ করে অপরাধমুলক ভাবে বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারনা করে টাকা আত্নসাত করার অপরাধে অভিযুক্ত। মামলা দায়েরের পরপরই আসামীদের ধরতে ও খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধারে একাধিক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।