রাজশাহী সদরে মনোনয়ন চেয়েছেন কবীর হোসেন
রাজশাহী সদরে মনোনয়ন চেয়েছেন কবীর হোসেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে রাজশাহী-২ (সদর) আসনে মনোনয়ন চেয়েছেন বিএনপির প্রবীন নেতা এ্যাডভোকেট কবীর হোসেন। সম্প্রতি দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আগামী নির্বাচন নিয়ে কবীর হোসেনের অবস্থান জানাতে চাওয়া হয়। সেখানে কবীর হোসেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শুধুমাত্র রাজশাহী সদর আসনে মনোনয়ন দেয়া হলে তিনি প্রার্থী হতে আগ্রহী। কবীর হোসেনের একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বর্তমানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা (১১ নং) কবীর হোসেন ১৯ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার সংসদ সদস্য ছিলেন। এর মধ্যে রাজশাহী-২ আসনে দুইবার ও রাজশাহী-৬ আসন থেকে একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও কবীর হোসেন ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রথমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমাবায় এবং পরে ভূমি প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। রাজশাহী বিএনপির একাধিক সূত্রমতে, কবীর হোসেন তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে চারবার বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। টানা তিনবার তিনি সাংসদ নির্বাচিত হলেও সর্বশেষ ২০০৮ সালের রাজশাহী-৩ আসন থেকে নির্বাচন করে তিনি পরাজিত হন। রাজশাহী সদর আসনকে বিএনপির ঘাটি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করলেও তারই রাজনৈতিক শীষ্য মিজানুর রহমান মিনুর সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে কবীর হোসেনকে দুইবার নির্বাচন করতে হয়েছে বাহিরের আসন থেকে। এবার তিনি সদর আসনে প্রার্থী হতে চান। ওই সূত্রগুলোর দাবি, নগর বিএনপির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও জেলার সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপুসহ রাজশাহী বিএনপির একটি বিশাল অংশ এখন কবীর হোসেনের সঙ্গে রয়েছেন। অন্তরালে থেকেই তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কবীর হোসেন। আর কেন্দ্র থেকে তাকে সহযোগিতা দিচ্ছেন তারই আরেক রাজনৈতিক শীষ্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রেজভী ও সহসভাপতি ব্যারিস্টার আমিনুল হক। ফলে রাজশাহী সদর আসনে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে এবার শক্ত অবস্থানে রয়েছেন কবীর হোসেন। ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত রাজশাহী-২ (সদর) আসন ছিল বিএনপির দখলে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনটি বিএনপির হাত ছাড়া হয়। ওই নির্বাচনে মহাজোট প্রার্থী ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার কাছে পরিজিত হন একবারেরর সংসদ সদস্য ও তিনবারের মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মিনু রাসিকের মেয়র ছাড়াও সংসদ সদস্য ছিলেন। এবারও তিনি সদর আসনের মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছেন। তবে এবার তার রাজনৈতিক গুরু কবীর হোসেনকে নিয়ে বেশ টেশনে রয়েছেন মিনু। মিজানুর রহমান মিনু ৯১ সালে প্রথম রাসিকের মনোনিত মেয়রের দায়িত্ব পান। ৯৪ সালে রাসিকের প্রথম নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। এর পর ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি নির্বাচিত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কবীর হোসেনের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর দলে নিস্কৃয় হয়ে পড়েন কবীর হোসেন। তবে গত দুই বছর ধরে অন্তরালে থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। সরাসরি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ছাড়াও কবীর হোসেন দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। এর ফলে রাজশাহীর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে এক জায়গায় চলে আসেন দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা ও প্রবীন নেতা কবির হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রেজভী ও সহসভাপতি ব্যারিস্টার আমিনুল হক। একই সঙ্গে তারা পরিবর্তণ আনের রাজশাহী নগর ও জেলা বিএনপির নেতৃত্বে। বিশেষ করে দীর্ঘ সময় দলে অবহেলিত ৮০ দশকের ছাত্রনেতার রাজশাহী জেলা ও নগর কমিটিতে স্থান পান। আর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ছাড়াও রাজশাহী নগরের নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়েন মিজানুর রহমান মিনু।