রাজশাহীতে চাঁদা দাবিতে বহুতল ভবন নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিল স্থানীয়রা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গিয়ে একটি বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার দুপুর পৌনে একটার দিকে নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায়। এসময় ওই ভবনটি নির্মাণকাজের তদারকারী মিলন হোসেন (২৮) নামের এক যুবককেও পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। পরে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ওই ভবনটি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ও ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বর্তমান চিকিৎসক নাসরিন আক্তার ডটির মালিকানাধীন জমিতের গড়ে তোলা হচ্ছে ভবনটি।
মারপিটের শিকার মিলন নামের ওই যুবক জানান, গত প্রায় ১৫ দিন আগ থেকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে ১০ তলা ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করেন ওই এলাকার বাসিন্দা ও চিকিৎসক নাসরিন আক্তার ডটি। এরই মধ্যে গতকাল সোমবার দুপুর পৌনে একটার দিকে স্থানীয় ১৫-২০ জন যুবকের একটি দল হাতে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গিয়ে ভবনের দায়িত্বে থাকা তত্বাবধায়ক মিলন আলীকে কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়।
এসময় মেশিনের সাহায্যে নির্মাণাধীন ভবনটির পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। কিন্তু ওই কাজ বন্ধ করতে রাজি না হওয়ায় ওই যুবকরা মিলনকে ধরে এলোপাথাড়ি মারপিট করতে থাকে। আর কাজ করা শ্রমিকদের অস্ত্র নিয়ে প্রানণাসের হুমকি দেওয়া হয়। এতে প্রাণভয়ে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেয়। একপর্যায়ে মিলন পালিয়ে গিয়ে পাশেই চিকিৎসক ডটির পুরনো বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এরপর চাঁদা দাবিকারী যুবকরা সেখান থেকে চলে আসে।
চিকিৎসক নাসরিন আক্তার ডটি অভিযোগ করে সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন যুবক গত কয়েকদিন ধরে ১০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে আসছিল। ভবন নির্মাণ করতে হলে তাদের ওই টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে গত কয়েকদিন ধরে সেখানে গিয়ে কেয়ারটেকারকে হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই মধ্যে আজ (সোমবার) দুপুরে এসে তারা মিলনকে মারপিট করে কাজ বন্ধ করে দেয়। তবে কারা এই কাজ করেছে, তাদের আমি কাউকে চিনি না। মারপিটের শিকার মিলনও কাউকে চিনতে পারেনি।’
নাসরিন আক্তার ডটি বলেন, ‘চাঁদার দাবিতে ভবন নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। আমি এ ঘটনায় স্থানীয় পুলিশের দ্বারস্থ হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে থানায় অভিযোগ করব।
তবে নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি আমান উল্লাহ কালের কণ্ঠকে এই ধরনের কোনো অভিযোগ সোমবার দুপুর পর্যন্ত কেউ আমার কাছে করেনি। অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’