যশোর আদালতে ছেলের সন্ধানে পুলিশের বিরুদ্ধে মায়ের গুমের মামলা দায়ের
মীর ফারুক শার্শা (যশোর) প্রতিনিধিঃ যশোর জেলার কোতয়ালী থানার ৭ কর্মকর্তা সহ ১৬ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গুমের মামলা দায়ের করেছেন এক সন্তান হারা মা। মঙ্গলবার যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ শাহিনুর রহমানের আদালতে মামলাটি দায়ের হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে যশোরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে আদেশ দিয়েছে।
গুমের মামলায় আসামীরা হলো কোতয়ালী থানার ১। এসআই মোঃ শহিদুল ইসলাম, ২। এসআই আমির হোসেন, ৩। এসআই হাসানুর রহমান, ৪। এএসআই গাজী রাজন, ৫। এএসআই সেলিম মুন্সী, ৬। এএসআই বিপ্লব হোসেন, ৭। এএসআই সেলিম আহম্মেদ, ৮। কনষ্টেবল মোঃ আরিফুজ্জামান, ৯। মোঃ রফিকুল ইসলাম, ১০। মোঃ হাবিবুর রহমান, ১১। মোঃ আবু বক্কর, ১২। মোঃ মাহমুদুর রহমান, ১৩। মোঃ রাজিবুল ইসলাম, ১৪। মোঃ টোকন হোসেন, ১৫। ড্রাইভার মোঃ রমজান আলী, ও ১৬। মোঃ মিজান শেখ
পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী অসহায় মায়ের বাড়ি যশোর সদর শংকরপুর এলাকার তহিদুল ইসলাম খোকনের স্ত্রী মোছাঃ হিরা খাতুন।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন ৫ এপ্রিল সকাল ১০টায় তার ছেলে মোঃ সাঈদ ও তার বন্ধু শাওন পৌর পার্কে বেড়াতে যায়। ঐ দিন বেলা ১২টার দিকে সাক্ষী সাব্বির রহমান ফোন করে বাদী হিরা খাতুন কে জানান তার ছেলে সাঈদ ও তার বন্ধু শাওনকে পুলিশ আটক করেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি দেখেন পুলিশ ঐ দুজনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বাদীরা থানায় গেলে তাদের কে থানার ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাহারা সন্ধ্যা পর্যন্ত থানার বাইরে অপেক্ষা করার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে ১। আসামী এসআই শহিদুল ইসলাম ২। এসআই আমির হোসেন বাদী ও স্বাক্ষীকে ডেকে ছেলের জন্য ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা দাবী করে। স্বাক্ষীরা বাদীকে বোঝান পুলিশকে টাকা দেওয়ার দরকার নেই। আদালতে চালান দিলে সেখান থেকে জামিন নেওয়া যাবে। কিন্তু ৭ এপ্রিল পত্রিকার খবরের মাধ্যমে বাদী হিরা খাতুন জানতে পারেন সাঈদ ও শাওন পুলিশের কাছ থেকে পালিয়েছে। বাদীর ধারণা ঘুষের টাকা না দেওয়ায় আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ছেলে ও বন্ধুকে হত্যা করে পুলিশ লাশ গুম করেছে। ছেলের কোন সন্ধান না পাওয়ায় বাদী হিরা ৩০ মে যশোর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বলে জানায়। তাতেও তার সন্তানের কোন সন্ধান মেলেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতয়ালী থানার ওসি আজমল হুদা বলেন, সাঈদ ও শাওন সন্ত্রাসী ছিল। তাদের বিরুদ্ধে থানায় অসংখ্যা মামলা আছে। পুলিশ ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য সন্ত্রাসীর মা পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়। আটকের পর দুজন পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে গেছে এটাই সত্য। উক্ত ঘটনায় মামলাও রয়েছে। তাদেরকে ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।