বিয়ে ভাঙ্গছে শাকিব-অপুর
সদরুল অাইন:
দেশের চলচ্চিত্রজগৎ কয়েক দিন ধরে বেশ সরগরম শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন নিয়ে। কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম বিশ্বস্ত সূত্র আর গোপন সূত্রের বরাত দিয়ে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। তাতে ভীষণ চটেছেন অপু। শুধু তা-ই নয়, একটি সিনেমার মহরত অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে এসব সূত্রের উৎস জানতে চান।
কয়েক দিন ধরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাকিব-অপুর ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সূত্র দুজনের সংসার ভেঙে যাওয়ার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। তাঁরা আরও বলেন, ‘দুজনের বিবাহবিচ্ছেদ এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র!’ অপুর সাথে বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে এবার মুখ খুললেন শাকিব খান। বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও শাকিবের কথায় কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যায়, সংসারজীবনে তিনি মোটেও ভালো নেই। দেশের চলচ্চিত্রে শাকিব যতটা সফল, ঠিক ততটাই যেন সফল হতে পারেননি নিজের সংসার জীবনে।
শাকিব খান এখন ‘মাস্ক’ সিনেমার শুটিংয়ে থাইল্যান্ডে আছেন। এই সিনেমায় তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন কলকাতার নুসরাত। শাকিব বলেন, ‘এ বিষয়ে আপাতত কিছুই বলতে চাই না। কিছু হলে সবাই দেখতে পাবেন। তবে এটুকু বলতে পারি, যেটা আমাদের জন্য মঙ্গলজনক, সেটাই হবে।’
২০০৮ সালে গোপনে বিয়ে করার পর শাকিব ও অপুর সংসার ঠিকমতোই চলছিল। দুজনই নিজেদের মতো করে কাজ নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করেছিলেন। যেই না বিয়ে আর সন্তানের ব্যাপারটি জনসম্মুখে চলে আসে, তখনই শাকিব ও অপুর মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট অনেকের মতে, আর তখন দুজনের মধ্যে তৃতীয় পক্ষের আবির্ভাব ঘটে, যাদের কারণে দিনের পর দিন দুজনের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যান।
সবকিছু পাশ কাটিয়ে শাকিব সিনেমার কাজে মনোযোগী হলেও অপু পারেননি, কারণ তাঁর হাতে ওই সময় কোনো সিনেমার কাজ ছিল না। হাতে অখণ্ড সময় থাকায় তিনি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের টক শোতে উপস্থিত হয়ে নিজেদের বিয়ে ও সংসার নিয়ে নানা কথা বলেন। তাঁর কাছ থেকে শাকিব খান সম্পর্কে অনেক অজানা কথা বেরিয়ে আসে। আর অপুর এসব মন্তব্য নাকি শাকিবের কাছ থেকে তাঁকে আরও বেশি দূরে সরিয়ে দেয়। একপর্যায়ে তাঁদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়।
স্বামী-স্ত্রী হয়েও আপনাদের জীবনযাপন স্বাভাবিক ছিল না। শাকিব বলেন, ‘এমন তো অনেকের জীবনেই হয়। শুরুতে জটিলতার মধ্যে থাকলেও পরে কিন্তু সবাই ভালো আছে। অনেক বিখ্যাত মানুষের জীবনেও এমন ঘটনা হয়েছে। আমি যত দূর জানি, তাঁরা সবাই ভালোই আছেন।’
শাকিব খান প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরে বিবাহবিচ্ছেদের ব্যাপারে আবার জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে বলার তেমন কিছু নেই। একটা মানুষের জীবন যেভাবে সুন্দর হবে, সেভাবেই সে সাজিয়ে নেবে। যিনি যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, সেটাই করবেন।
মানুষ এত পরিশ্রম করে, এত কাজ করে কেন? একটু সুখের আশায়। আর তো কিছু না। সুস্থভাবে, সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্যই তো আমরা কাজ করি।’ তার মানে আপনি সুখী নন? ‘আমাকে ভালো থাকতে হচ্ছে। সুখে থাকার চেষ্টা করছি।’ বললেন শাকিব খান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই দুই জনপ্রিয় চিত্রতারকার ঘনিষ্ঠজনদের মতে, শাকিব ও অপুর বিবাহবিচ্ছেদের মতো কিছু ঘটার সম্ভাবনা থাকে, সে ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি কারণ প্রভাব ফেলতে পারে। তাঁদের মতে, শাকিবকে কোনো কিছু না জানিয়ে হুট করে টেলিভিশনে শিশুসন্তানকে নিয়ে অপুর হাজির হওয়া, নানা সময়ে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাকিব খান ও তাঁর পরিবার নিয়ে অপুর কটূক্তি করা, অন্য নায়িকাদের সঙ্গে শাকিব খানকে জড়িয়ে মুখরোচক কথা বলা, একমাত্র সন্তানের জন্মদিন বাবা শাকিব খানের অর্থে উদ্যাপন করা হলেও দাওয়াতপত্রে শুধু মা অপুর স্থিরচিত্র ব্যবহার করা, আর গত কয়েক মাসে দেশের সিনেমায় যাঁরা প্রকাশ্যে শাকিব খানের বিরোধিতা করছিলেন, তাঁদের সঙ্গে অপুর সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং কাজ করা।
এদিকে শাকিব খানের পরিবারের ঘনিষ্ঠজনের দাবি, অপু তাঁর শিশুসন্তানের দেখাশোনা ঠিকভাবে করছেন না। বেশির ভাগ সময় গৃহপরিচারিকার কাছে আব্রামকে রেখে তিনি বাসার বাইরে থাকেন। বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে অপু বলেন, ‘আমি ডিভোর্স নিয়ে এখনই কিছু বলব না। আর বিবাহবিচ্ছেদ হলে আপনারা তখন জানতেই পারবেন। বিষয়টি একান্তই ব্যক্তিগত। যদি এমন কিছু ঘটে, তা আমি নিজেই আপনাদের ডেকে জানাব।’