ধুনটে আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পত্রিকা বিক্রেতারা
কারিমুল হাসান লিখন, ধুনটঃ
বগুড়ার ধুনট উপজেলার পত্রিকা বিক্রেতা গন ব্যবসায়ীক ভাবে আর্থিক বিপর্যয়ে পড়েছে। মাসের পর মাস বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পত্রিকা বিলি করার পরেও মাস শেষে ঠিকমত টাকা না পাওয়ার কথাও বলেছেন অনেক পত্রিকা বিক্রেতা।
ধুনট উপজেলার পত্রিকা বিক্রেতা স্বপন কুমার সাহা জানান- আগের চেয়ে বর্তামানে পত্রিকার চাহিদা কমে গেছে। সারাদিন পত্রিকা বিক্রি করার পরেও অনেক পত্রিকা ব্যাগেই রয়ে যায়। প্রায়ই দিন শেষে কেনা দামের চেয়ে কম দামে পত্রিকা দিতে হয়। শুধু তাই নয়, কোন কোন হোটেলে চা’ও খেতে হয় পত্রিকার বিনিময়ে। এতসব ব্যবসায়ীক জটিলতার মধ্যে মাস শেষে যখন গ্রহকের কাছ থেকে পাওনা টাকা চাওয়া হয় তখন নির্দ্দিষ্ট সময়ে সেই টাকা পকেটে আসেনা। আজ না কাল, কাল না পরশু, এভাবে অনেক পাওনা অর্থকে অন্যের হাতে রেখে বাকিতে বাজার করে সংসার চালাতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পত্রিকা হকার জানান- বাজারে সবজীর দাম চাউলের দাম বৃদ্ধি থাকায় পত্রিকা বিক্রি করে বর্তমান সময়ে সংসার চালানো আমাদের পক্ষে অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে ধুনট জিরো পয়েন্টের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রতন কুমার রায় সংবাদ কর্মীকে জানান- কিছুদিন আগেও নিয়মিত পত্রিকা কিনতাম। বর্তমানে মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইন ভার্সনে পত্রিকা পড়ার কারনে এখন আর তেমন পত্রিকা কেনা হয়না। তাছাড়া আনলাইন মাধ্যমে সবখবর সবার আগেই পাওয়া যায়।
সাধারন মানুষ মনে করেন- অনলাইনে যেকোন ধরনের খবর মোবাইলের মাধ্যমে সহজেই পাওয়া যায় বলে প্রিন্ট পত্রিকার চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
পত্রিকা এজেন্ট সঞ্জয় কুমার জানান- অনলাইন ভার্সনে তাৎক্ষনিক সংবাদ প্রচার হওয়ায় জনগন প্রিন্ট পত্রিকা থেকে দুরে সরে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে চাহিদাও। প্রতিদিন পত্রিকা বিক্রেতাদের কাছে যে পরিমান পত্রিকা বিক্রয় হয় তাদের পক্ষে বর্তমান সময়ে সম্পুর্ণ পত্রিকা বিক্রি করা সম্ভব হয়না। যেটুকু বিক্রি হয় তা উপজেলার বিভিন্ন কর্মকর্তার অফিসে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও অফিসের মতো কোন দোকানে, তাও সিমিত। খোলা বাজারে আজ থেকে ৫ বছর আগে যে পরিমান পত্রিকা বিক্রি হতো এখন তার ৪ ভাগের এক ভাগও ঠিকমতো বিক্রি হয়না।
ধুনট উপজেলার বেশির ভাগ হোটেল রেস্তরায় পত্রিকা দেখা গেলেও এখন আর হোটেল রেস্তরায় তেমন পত্রিকা দেখা যায়না। এমন কি কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে পত্রিকা পড়া নয়, বরং অফিসের আধুনিকতা বাড়াতে পত্রিকা ক্রয় করে। এমন অবস্থার প্রেক্ষিতে পত্রিকা বিক্রেতারা নানা ভাবে আর্থিক বির্পয়ে পড়ছে। ধিরে ধিরে তাদের পত্রিকা বিক্রির ব্যবসা অনিশ্চিয়তার দিকে চলে যাচ্ছে বলেও মনে করেন উপজেলার পত্রিকা