"চিরকূট লিখে প্রেমিকার অাত্মহত্যা : প্রেমিক শাহজাহানের মধ্যে অামাকে দেখতে পাবে"
সদরুল অাইন :
চিরকুট লিখে এক ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা এখন টক অব দ্যা টেকনাফে পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ টেকনাফের জনসাধারনের মধ্যে এই আত্মহত্যা নিয়ে মুখরোচক আলোচনা চলছে।
গত ২১শে নভেম্বর উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াবাজার হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী নুর বেগম (১৫) প্রেমের বিরহ-ব্যথা সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুর পথ বেঁছে নিয়েছে। জানা গেছে, বাবা-মা বেড়াতে যাওয়ার সুযোগে খালি বাড়িতে ঘরের চালার তীরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তার ছোট ভাই নুরুল আবছার বোনের ঝুলন্ত লাশ দেখে চিৎকার করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর বেরিয়ে আসে স্কুল পড়ুয়া প্রেমিক জুটির ধনী-গরীবের ব্যবধানে গড়া অব্যক্ত প্রেমের কাহিনী।
এদিকে আত্মহত্যার আগে নুর বেগমের লিখে যাওয়া চিরকুটের সুত্র ধরে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে তার জীবনের প্রেমের কাহিনীসহ মা-বাবা অন্যত্র বিয়ে দেয়ার তোড়জোড়। যার কারণে নুর বেগম গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার মাধ্যমে আবেগঘন ও স্বপ্নভরা একটি প্রেমিক জুটির স্বপ্নভঙ্গ ইতিহাস সৃষ্টি করে।
জানা গেছে, একই গ্রামের প্রবাসী নুরুল আমিনের মেয়ে নুর বেগম ও মৃত মৌলভী ছৈয়দ আহমদের পুত্র মো. শাহজাহান নয়াবাজার হাইস্কুলে পড়াশুনা করতো। নুর বেগম প্রতিদিন শাহজাহানের বসত-বাড়ির উপরের রাস্তা দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়াসহ এক সঙ্গে চলাফেরায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ইতিমধ্যে পাশ্ববর্তী শাহজাহানের সঙ্গে স্কুলে পড়াশুনা ও আসা-যাওয়ার কারণে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠার বিষয়টি জানতে পারেন মা। শাহজাহানের পরিবার গরীব বিধায় এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। ফলে রক্ষণশীল পরিবার মেয়ে উপযুক্ত হওয়ার কারণে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দিয়ে বাড়ির দেওয়ালের মধ্যে মেয়েকে সীমাবদ্ধ রাখে।
এদিকে নুর বেগমের মা-বাবা দ্রুত মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার চিন্তা ভাবনা করেন। এরই সুত্র ধরে প্রবাসী পিতা নুরুল আমিন প্রায় ৬ মাস আগে দেশে ফিরে আসেন। ইতিমধ্যে মা-বাবা লেদার এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার জন্য কথা-বার্তা পাকাপোক্ত করে ফেলে। বিষয়টি নুর বেগম জানতে পেরে প্রেমের বেদনায় ভেঙ্গে পড়েন। কিন্তু নুর বেগমের পিতা নুরুল আলম এই বিষয়টি অস্বীকার করে তার মেয়ের আত্মার শান্তি কামনা করেন। শেষ পর্যন্ত নুর বেগম প্রেমের বলিদান দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তাঁর শেষ লেখা চিরকুটে পরিচয়হীন ‘মো. শাহজাহানের মধ্যে তাকে দেখতে পাবে’। এছাড়া তাকে কিছু না করার জন্যও চিরকুটে উল্লেখ করেছেন।