‘আমরাও পারি’
আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে আমুল পরিবর্তন আসছে রাজশাহী কলেজের বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মহা. হবিবুর রহমান। তিনি বলেন, আগামী বছর রাজশাহী কলেজের আইসিটি ও সফওয়্যার বিভাগসহ আরো ৬টি নতুন বিভাগ খোলা হবে। নির্মাণ হবে তিনটি ১০ তলা ভবন। এর মধ্যে দুইটি ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস করা হবে। পদ্মাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম এর সঙ্গে সাক্ষাতকারে এ তথ্য জানান দেশের মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া কলেজ রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান।
পদ্মা পাড়ে ১৮৭৩ সালে ৩৫ একর এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী কলেজ। বর্তমানে ২৪টি বিভাগের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে এখানে। আর শিক্ষক আছেন ২৪৮ জন।
অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বলেন, আমরাও পারি, এর প্রমান রাজশাহী কলেজ। এ কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা দেখিয়ে দিয়েছে ভাল কিছু করা যায়। এ কারণে এখন এ কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থা সারাদেশে রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এটি ঘোষণা করেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ কলেজের সব কার্যক্রমের উপরে প্রামান্যচিত্র তৈরি করা হবে। যেটি সারাদেশে সব কলেজে পাঠানো হবে। এটি অনুসরণ করার জন্য কলেজগুলোকে নির্দেশনা দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে রাজশাহী কলেজে সেন্টার অব এ্যাকসিলেন্ট তৈরি করা হবে। যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা, গবেষণা, আইসিটির ক্ষেত্রে স্কিলনেস ডেভলপ করা, সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গবেষণা এবং বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গবেষণাসহ নেতৃত্ব সৃষ্টির সুযোগ পাবে। এছাড়াও শিক্ষকদের জন্যও সেখানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, আগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পেরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা মনোবেদনা, মর্মব্যথা ছিল। তাদের মনে হতো রাজশাহী কলেজে ভর্তি হয়ে জীবনটা শেষ হয়ে গেল। এই মনমানসিকতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে দূর করা গেছে। তাদেরকে বলা হয়েছে, শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি তোমাদের যা যা লাগবে কলেজ প্রশাসন থেকে সবরকম সহযোগিতা করা হবে। ছোট ক্যাম্পাসটাকে তোমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রকম সুযোগ সুবিধা পাবে। সেভাবেই হীনমান্যতা দূর করে তোমাদেরকে যোগ্য হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। শিক্ষার্থীরা গড়ে তুলে এই প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়ভাবে তুলে ধরছে। শিক্ষার মানের দিক দিয়ে এখন পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এসেছে রাজশাহী কলেজ।
হবিবুর রহমান বলেন, কলেজ প্রশাসনের আন্তরিকতায় এই ছোট ক্যাম্পাসে অ-রাজনৈতিক ২৮টি সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছে। অ্যাকাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি ছোট ক্যাম্পাসে সংগঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তারা নিজেদের গড়ে তুলতে সংগঠনগুলো করা হয়েছে। এর ফলে পরবর্তীতে ক্যারিয়ারে প্রবেশের সময় যোগ্যতা অনুযায়ী ঠাঁই করে নিচ্ছে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজ। তাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সারাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো এবারও সেরা মুকুটটা ধরে রেখেছে পদ্মা পাড়ে গড়ে ওঠা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
তিনি বলেন, এক সময় রাজশাহী কলেজে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারি লেগে থাকতো। কিন্তু বর্তমানে কলেজ প্রশাসনের উপর রাজনৈতিক তেমন প্রভাব বিস্তার নেই। এজন্য স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বড় ভূমিকা রয়েছে। তারা কলেজের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার জন্য কলেজ প্রশাসনকে সবরকম সহযোগিতা করে থাকেন বলে জানালেন কলেজ অধ্যক্ষ।’