প্রধানমন্ত্রীর কম্বোডিয়া সফর রোহিঙ্গা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কম্বোডিয়া সফরে নয়টি সমঝেতা স্মারক ও দুটি চুক্তি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কম্বোডিয়ার সফর উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
আগামী ৩ ডিসেম্বর কম্বোডিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী – তিন দিনের এ সফর শেষে ৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন জানান মন্ত্রী।
মাহমুদ আলী বলেন, সফরে বেসরকারি বিমান চলাচল ও দুই দেশের শীর্ষ বাণিজ্যিক সংগঠনের মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত দুটি চুক্তির সম্ভবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এবার বৌদ্ধপ্রধান দেশে যাচ্ছি— রোহিঙ্গা ফেরাতে এ সফর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে তাদের সঙ্গে আমাদের আগে থেকেই হৃদ্যতার সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, কম্বোডিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক কোনো দূতাবাস নেই— সফরে দুই দেশের মধ্যে দূতাবাস খোলার বিষয়েও কথা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
এছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যুটিও আসবে। মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ কম্বোডিয়া। রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নিতে তারাও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।
কম্বোডিয়ার উত্তর-পূর্বে লাওস, পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে ভিয়েতনাম, পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমে থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে থাইল্যান্ড উপসাগর। নমপেন দেশটির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।
পোপের ঢাকা সফর সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পোপের এ সফর আমাদের জন্য গৌরব ও গর্বের। আমরা রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিপদে আছি। পোপের এ সফর আমাদের জন্য আলাদা গুরুত্ব বহন করে। রোহিঙ্গা সংকটে পোপ আমাদের পাশে আছেন বলে আগেই জানিয়েছেন।
এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে নয়টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এরমধ্যে জয়েন্ট ট্রেড কাউন্সিল গঠন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়ন সহযোগিতা, শ্রম ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ খাত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা, যুদ্ধের ইতিহাস, স্মৃতিস্তম্ভ এবং স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণে সহযোগিতা বিষয়ক, মৎস ও অ্যাকুয়াকালচার বিষয়ক এবং বিনিয়োগ প্রসারে সমঝোতা স্মারক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং রয়্যাল একাডেমি অব কম্বোডিয়া (আরএসি) এর মধ্যে একাডেমিক পর্যায়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি জানান, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুনসেনের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সরকারি সফর। সফরকালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ছাড়াও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কম্বোডিয়ার রাজার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী, এসডিজির মুখ্য সমম্বয়ক, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সদস্য এবং পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, মৎস ও পশু সম্পদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থাকবেন।
গত ২০১৪ সালের ১৬ থেকে ১৮ জুন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে সফর করেন— তার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এ সফর করবেন।
দুই দেশ তাদের জাতির পিতার সম্মানে স্ব স্ব দেশের রাজধানীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের নামকরণ করবে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বারিধারা কূটনৈতিক এলাকার ‘পার্ক রোড’ রাস্তাটি কম্বোডিয়ার প্রয়াত রাজা নরোদম সিহানুকের নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অনুরূপভাবে কম্বোডিয়ার সরকার বঙ্গবন্ধুর নামে নমপেনের প্রধান সড়কের নামকরণ করার কথা রয়েছে।