খনি দুর্নীতি মামলা চলতে বাধা নেই সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফের
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা চলবে—এ রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
বুধবার সকালে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা প্রশ্নে আলতাফ হোসেনের আবেদন খারিজ করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছে।
একইসঙ্গে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ রায়ের ফলে মামলাটি চলতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
একই মামলার বৈধতার প্রশ্নে চলতি বছরের ২২ মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন:
বিএনপি-জামাত জোট সরকারে তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম, মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, তৎকালীন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার প্রাক্তন পরিচালক মঈনুল আহসান, তৎকালীন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশারফ হোসেন এবং তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মো. আমিনুল হক।
মামলা ও বিচার নিয়ে ফিরে দেখা:
বিগত ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা করে দুদক।
ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই যে অভিযোগপত্র দেয় দুদক, তাতে আসামিদের বিরুদ্ধে চীনা প্রতিষ্ঠান কনশোর্সিয়াম অফ চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়।
খালেদাসহ আসামিরা মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে।
মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দেওয়া হয়। হাইকোর্টের ওই আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল থাকায় আটকে যায় বিচার।
দীর্ঘ সাত বছর পর ২০১৫ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরে সেই রুলের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ তা খারিজ করে দেয়।
একইসঙ্গে মামলার ওপর স্থগিতাদেশ তুলে নিলে অন্য আসামিদের বিচারের বাধা কাটলেও এতদিন পর্যন্ত স্থগিত ছিল আলতাফ হোসেন চৌধুরীর বিচার কার্যক্রম।
তবে ইতোমধ্যে মামলার ১৬ আসামির মধ্যে চার জনের মৃত্যু ও যুদ্ধাপরাধে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় বর্তমানে আসামির সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে।
আসামিদের মধ্যে সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ও বিএনপির মহাসচিব আব্দুল মান্নান, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এ আর ওসমানী এবং বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া যুদ্ধাপরাধে জামাতর নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় তাদের নাম তালিআকা থেকে বাদ পড়েছে।